অলিউর রহমান নয়ন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশা, ঠান্ডা বাতাস আর হাড় কাঁপানো শীতে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে । সন্ধা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও রোদের উত্তাপ অনুভূত হচ্ছে না তেমন। ফলে কনকনে শীতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে । এ অবস্থায চরম বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। শীতের তীব্রতায় দোকান পাট বন্ধ করায় সন্ধার আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে জেলার হাট- বাজার গুলো। বুধবার সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষকে শীতবস্ত্রের অভাবে খড়-কুটো জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এছাড়াও শীতের তীব্রতায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ী গ্রামের অটোবাইক চালক আমিনুল ইসলাম জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে চলাচল বিপদজনক হয়ে পড়েছে । হেড লাইট জ্বালালেও ভালভাবে দেখা যাচ্ছে না পথ। এ ছাড়া ঠান্ডার কারণে সড়কে যাত্রী না থাকায় আয় রোজগারও কমে গেছে।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকের ছড়া ইউনিয়নের দিনমজুর আবুল কালাম ও আবুবক্কর জানান, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডার কারণে তারা সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছেন না। ফলে মজুরী কম দিচ্ছেন গৃহস্থরা।
নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঠান্ডাজনিত রোগ যেমন, জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে হাসপাতালে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বুধবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এ অবস্থা আরও তিন-চার দিন থাকতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলার ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নয়টি উপজেলায় আরো ১ কোটি ৯ লাখ টাকার শীতবস্ত্র সহ কম্বল ইউএনওদের মাধ্যমে বিতরণ চলছে।