তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় আজ মঙ্গলবার বিকেলে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ করেছেন চা-শ্রমিকেরা। পরে জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধে শ্রমিকেরা রেলপথ ছাড়লে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, খবর পেয়ে কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওছার দস্তগীর, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুছ ছালেক ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
তাঁরা জনদুর্ভোগের কথা তুলে ধরে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের রেলপথ থেকে সরে আসার অনুরোধ জানান। পরে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে রেলপথ ছেড়ে দিলে ট্রেনটি সিলেটের পথে রওনা দেয়। এরপর শ্রমিকেরা মিছিল নিয়ে আবারও নিজেদের বাগানে ফিরে যান।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বেলা তিনটার দিকে উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানের শ্রমিকেরা মিছিল নিয়ে কুলাউড়া পৌর শহরের নবীন চন্দ্র মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের চৌমোহনায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে বিকেল চারটার দিকে সিলেটগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন সেখানকার আউটার রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা রেলপথ অবরোধ করে ট্রেনটি আটকে দেন।
এ সময় ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার বলেন, শ্রমিকদের বোঝানোর পর তাঁরা রেলপথ ছেড়ে চলে যান। কুলাউড়া জংশনের স্টেশনমাস্টার মুহিব উদ্দিন বলেন, চা-শ্রমিকদের অবরোধের কারণে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট ট্রেনটি আটকা ছিল।
২১ আগস্ট রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন, শ্রম দপ্তরের প্রতিনিধি, শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে ১২০ টাকা মজুরিতেই কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাব মেনে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ইউনিয়নের নেতারা। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ১৩ আগস্ট থেকে দেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকে চা-শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন। ২০ আগস্ট সরকারের সঙ্গে সংগঠনের নেতাদের বৈঠকে মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ অবস্থায় চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতারা সাধারণ চা শ্রমিকদের রোষানলে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কিন্তু বৈঠকের পরপরই ১৪৫ টাকা মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বিভিন্ন বাগানের সাধারণ শ্রমিকেরা ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।