কীসের করোনা? করোনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চীনে শুরু হয়েছে বাৎসরিক কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসব। মহামারির কারণে চলতি বছর এই উৎসবের আয়োজন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও সবকিছুকে উড়িয়ে দিয়ে শুরু হয়েছে এটি। চলবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত।
পশুর শরীর থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে বির্তকের মধ্যেই চীনের ইউলিন শহরে চলছে কুকুরের মাংস খাওয়ার মেলা।
১০ দিন ধরে চলা এ মেলায় মহামারি উপেক্ষা করেই ভিড় করছেন অনেকে। তবে অন্য যেকোন বছরের তুলনায় ভিড়টা একটু কমই বলছেন দর্শনার্থীরা।
কুকুরের মাংস খাওয়ার অভ্যাস চীনের মানুষদের বহুদিনের। চীনের বন্যপ্রাণি বেচাকেনার বাজার থেকে করোনা ছড়িযেছে এমন বিতর্ক থাকলেও থামেনি বন্যপ্রাণি খাওয়ার চিরচেনা অভ্যাস। এবারও ইউলিন শহরে বসেছে কুকুরের মাংস খাওয়ার মেলা।
চীনের অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো এই কুকুরের মাংস। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউলিন শহরে প্রতিবছরই অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসবের। এতে যোগ দেন হাজার হাজার মানুষ। নানা পদের খাবারের পাশাপাশি সেখানে বিক্রি হয় খাঁচায় বন্দি জীবন্ত কুকুরও। বাদ পড়ে না কয়েকদিন বয়সী ছোট ছোট কুকুরছানাও।
গত বছরের শেষভাগে চীনের উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। সেখানে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস সংক্রমণের পেছনে বাদুড় খাওয়ার অভ্যাসকেই দায়ী করা হচ্ছে। তবে করোনা মহামারির মধ্যে চীনে বাদুড়, সাপ, প্যাঙ্গোলিন, গিরগিটি ইত্যাদি খাওয়া অনেকটাই কমেছে। গত এপ্রিলে দেশটির শেনজেন শহরে কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধও হয়েছে। তবে এসবেও আটকায়নি ইউলিন শহরের মেলা।
পশুপ্রেমীদের বিশ্বাস, এই বছরের পরেই হয়তো বন্ধ হবে চীনে কুকুর খাওয়ার এই উৎসব। চীনা প্রশাসন বন্যপ্রাণী খাওয়া রোধে আইন করছে বলে জানা গেছে। পোষ্য প্রাণীদের রক্ষায়ও নতুন আইন আসতে পারে। ফলে এরপরে হয়তো কুকুরের প্রতি এমন নির্মমতার মেলা বন্ধ সম্ভব হবে।
চীনে পশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করে হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির মুখপাত্র পিটার লি বলেন, তার প্রত্যাশা, প্রাণীদের কথা ভেবে না হলেও শুধু নিজেদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এমন অবস্থার পরিবর্তন হবে।
তিনি জানান, চীনে প্রতি বছর এক কোটি কুকুর ও ৪০ লাখ বিড়াল মারা হয় ব্যবসার জন্য।
এছাড়া মহামারির মধ্যেই কুকুর ও কুকুরের মাংস কেনার জন্য স্থানীয় বাজার-রেস্তোঁরাগুলোতে যেভাবে ভিড় হচ্ছে তা বর্তমান পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। ফলে এটি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সূত্র: রয়টার্স।