মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ক্যাটারপিলার নামে এক ধরনের পতঙ্গের আক্রমণে চা উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ক্যাটারপিলার পতঙ্গ মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংস করে দিচ্ছে চা গাছের পাতাসহ নতুন কুঁড়ি। পতঙ্গগুলো খুব দ্রুতগতিতে বংশ বিস্তার করছে বলে জানা গেছে। এতে করে চায়ের কুড়ির ধ্বংশ মানে চা উৎপাদনে ব্যাহত।
উপজেলার ধলই চা বাগানে ক্যাটারপিলার নামের এক ধরনের পতঙ্গ ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় দেড়শো একরের মতো চা গাছ বিনষ্ট করে ফেলেছে এই পতঙ্গের দল। পতঙ্গগুলো সুযোগ বুঝে মানুষকেও কামড় দিচ্ছে। এ কারণে নারী ও পুরুষ চা শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ সময়ে প্রতিদিন চা বাগানগুলোতে ২০-২৫ হাজার কেজি চা পাতা চয়ন করা যেত, সেই জায়গায় বর্তমানে ৩-৪ হাজার কেজি চা পাতা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ধলই চা বাগানের চা শ্রমিক ইন্দ্রজিৎ গড়, চিনু, নির্মল পাশী, অমরিত, লিটন, ছোটন কুর্মী জানান,এ ধরনের পোকা আগে কখনো দেখেননি। এরা একরের পর একর চা পাতা খেয়ে ফেলছে মুর্হূতের মধ্যে। আবার এই পোকা মানুষকে কামড় দেয় শরীরে লাগলে চুলকায়। অনেকে চা পাতা তুলতেও ভয় পাচ্ছেন, যার ফলে পাতা চয়ন কমে গেছে একদম। আমাদের ঠিকমতো হাজিরাও উঠছে না।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ধলই চা বাগানের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক বদরুল ইসলাম বলেন, গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বাগানে ক্যাটারপিলার নামক একধরনের কীটপতঙ্গ ছড়িয়ে পড়েছে। কীটপতঙ্গ চা পাতার কুড়ি খেয়ে ফেলছে। এতে পাতাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কয়েকটি সেকশনের প্রায় দেড়শো একরের মতো চা গাছ বিনষ্ট করে ফেলেছে। এদের উপদ্রব বেড়ে বিভিন্ন সেকশনগুলোতে আক্রমণ করছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও এদের ধ্বংস করা যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, গত বছর এ সময়ে ৭০ শতাংশ চা গাছে কচি পাতা এসেছিল। এ বছর এর পরিমাণ ২০ শতাংশের কম। স্থানীয় চা শিল্প পুরোপুরি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। চা বাগানের জন্য জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত ৫-৭ ইঞ্চি বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়।
এদিকে এ বছর ২ লাখ ৮৫ হাজার একরের বেশি জমি থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ কোটি ২০ হাজার কিলোগ্রাম।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, অধিক তাপমাত্রা মানুষ ও গাছপালা উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। তীব্র তাপদাহে ও পরিবেশ পরিস্থিতি বিগত দিনের থেকে ভিন্ন রূপে দেখা মিলছে।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজ বাপ্পি