১০ই ডিসম্বর বি এন পি’র মহাসমাবেশ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা হয়েছে বহু। দেশের মানুষও শঙ্কায় ছিল কি হয় দেখার জন্য। বি এন পি নেতারা বলেছিল ঐ দিন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় বসবেন, তারেকও দেশে ফিরে আসবে। কিন্তু আসলে কিছুই ঘটেনি। বি এন পি’র সরকার পতনের দাবী ছিল মিথ্যাচার। সাধারন মানূষত বটেই বি এন পির তৃনমুলের নেতা-কর্মারাও এখন এই মিথ্যাচারে বিব্রত। রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য হবে সত্য নির্ভর এবং যা বলবেন তা করেও দেখাবেন। কোন হঠকারি বক্তব্য দিলে নেতাত বটেই দলও আস্থা হারায়। অসত্য রাজনীতি স্থায়ী হয়না।
ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে বি এন পি অসত্য রাজনীতি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। ভুল রাজনীতি করে নেতারাও এখন জেলে।বেগম জিয়া এবং তারেক আগেই বিভিন্ন অপরাধে দোষি হয়ে সাজাপ্রাপ্ত। এখনো তারেক লন্ডনে বসে নিত্য অপপ্রচার করছে সরকারের বিরুদ্ধে। নেতাকর্মীদের টাকায় বিলাসি জীবন কাটাচ্ছে লন্ডনে। তারেকের বক্তব্য শুনে সিনিয়র নেতারা বিব্রত আর বিভ্রান্ত। বার বার আন্দোলনের ঘোষনা দিয়ে তারেক দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে বলে দলের নেতারাই তারেকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে। জনগন (যারা বি এন পি’কে সমর্থন করে) তারা ক্রমেই আস্থা হারাচ্ছে নেতৃত্বের উপর। বি এন পি দেশের রাজনীতি বদলে দিবে আশা করেনা কেউ। ১০ই ডিসম্বরের ব্যর্থ হুঙ্কার সে কথাই প্রমান করেছে আবারও।
তাহলে আগামি নির্বাচনের দৃশ্যটি কেমন হবে? আবারও কি বি এন পি নির্বাচন বর্জন করবে? নাকি নির্বাচনে গিয়ে সংখ্যা গরিষ্ঠ আসন পেয়ে বিজয়ী হবে? যদি বিজয়ী হয় তাহলে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পারেনি দলের নেতারা। খালেদা জিয়া কিংবা তারেক দু’জনেই সাজাপ্রাপ্ত হয়ে নির্বাচনে অযোগ্য। তাহলে কি মির্যা ফখরুল বি এন পি’র প্রধানমন্ত্রী হবেন? জনগন কি তা মেনে নিবে। বি এন পি’ও কি ফখরুলকে প্রধানমন্ত্রী করতে চায় কিনা! এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দলের ভেতরেও। এসব প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বি এন পি জনগনের সমর্থন পাবে মনে হয়না।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
দ্বিতীয় কথা, জামাত স্বাধীনতা বিরোধী দল এবং এখনো ৭১ এর অপরাধ স্বিকার করেনি- ক্ষমা চায়নি। এই দলটি উগ্র জঙ্গিবাদ প্রচার করছে দেশে। বি এন পি’র সঙ্গে জামাতের সখ্যতা জন্মলগ্ন থেকেই। বি এন পি’র অনুগ্রহে জামাত এখন দেশের সব লাভজনক প্রতিষ্ঠানের মালিক। তারাই বি এন পি’র পক্ষে অর্থ লগ্নি করে। জনগনের বিরোধিতা সত্যেও জামাতকে ছাড়তে পারেনি বি এন পি। অর্থ প্রদান ছাড়াও বি এন পি’র পক্ষে মাঠে নামেছে জামাত সদস্যরা। বিষয়টি দেশের মানুষ জানে। ১০ই ডিসম্বর বি এন পি সমাবেশ ডাক দিলেও কলকাঠি নেড়েছে জামাত। অর্থ এবং মানুষ যোগার করেছে জামাত।
সরকারের বিরুদ্ধে জনমনে অসন্তোষ ফুসে উঠছে এ কথা ঠিক। দ্রব্যমূল্য নিয়েও মানূষ সুখে নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের কোন দোষ নেই। পৃথিবী জুড়েই অভিন্ন অবস্থা চলছে। বরং বাংলাদেশ অনেক দেশের তুলনায় এখনো ভাল অবস্থানে রয়েছে। বি এন পি ক্ষমতা পেলে এই অবস্থার উন্নয়ন হবে এমন গেরান্টি কি বি এন পি দিতে পারবে?
দেশ পরিচালনায় বি এন পি’র রেকর্ড ভাল নয়। দুর্নীতির অভিযোগ তাদের মুখে বেমানান। ২০২৩ সালের নির্বাচন তত্বাবধায়ন সরকারের অধীনে হলেও বি এন পি’র ফলাফল এখনকার চেয়ে খুব বেশী বদল হবেনা। জাতীয় পার্টিই হবে প্রধান বিরোধী দল। বি এন পি’কে বেকায়দায় ফেলতে সরকার জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিবে এটাই স্বাভাবিক। বি এন পি নির্বাচনে না গেলে এবার অনেক নেতাই জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচন করবে। অধিক সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে বি এন পি। এ কথা বি এন পি’ও জানে। শেষমেষ সিদ্ধান্ত বদল করে নির্বাচনে গেলেও ফলাফল বদল হবেনা। কারন দলে নেতৃত্ব নেই। তখন দল কি নিয়ে রাজনীতি করবে। সেই ক্ষেত্রটি প্রস্তুত করতেই আগাম একটি ইস্যু প্রস্তুত করতে সর্ব শক্তি দিয়ে ১০ই ডিসম্বর মহা সমাবেশ ডেকেছিল বি এন পি (এবং জামাত)। তাদের সেই কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। নেতারা এখন জেলে। এই অবস্থা থেকে বি এন পি’র ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হবে। ১০ই ডিসম্বরের মহা সমাবেশের অর্জন এটাই।