ঢাকা, ১১ জানুয়ারি ২০২১ খ্রি.
’কিশোরদেরকে বিপথগামী হতে দেয়া যাবে না। কিশোর গ্যাং নামে কোনো দৌরাত্ম্য চলতে পারে না। আমাদেরকে এ ধরনের যে কোনো দৌরাত্ম্য মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের একটি প্রজন্ম নষ্ট হয়ে যাবে তা আমরা চাই না। আর এ জন্য দায়িত্ব নিতে হবে পিতা-মাতা, পরিবার ও সমাজকেও। পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানের খোঁজ খবর রাখতে হবে। তাদের মধ্যে নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধ গড়ে তুলতে হবে।
পাশাপাশি, এ সংক্রান্তে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকেও আরো জোড়ালো ভূমিকা পালন করতে হবে। আঠারো বছরের কম বয়সীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের ক্ষেত্রে আইনের ভিন্ন ভাষ্য রয়েছে। তাই, শুধুমাত্র আইনি পদক্ষেপ বা পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহন করে এর সমাধান সহজ নয়। তাই, সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান প্রজন্মকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে র্যাব সেবা সপ্তাহের শেষ দিনে আজ সোমবার (১১ জানুয়ারি) সকালে দরিদ্র মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এ কথা বলেন।
আইজিপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে কৃতজ্ঞচিত্তে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের শাহাদতবরণকারী সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং সকল মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
তিনি করোনাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল সম্মুখযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে র্যাব ফোর্সেস হেডকোয়ার্টার্সের শহীদ লে. কর্ণেল আজাদ মিলনায়তনে অয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্ণেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার।
আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হতাম না। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর চর্চা করতে হবে, তা না হলে আমাদের দেশপ্রেম সুসংহত হবে না।
পুলিশ প্রধান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সামাজিক ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রাকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
উপস্থিত শিক্ষার্থী ও আগামী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, তোমরা ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের নাগরিক হবে। তোমাদেরকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে, নিজেদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি করোনাকালে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে র্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করেন। আইজিপি বলেন, সেবা সপ্তাহের র্যাব এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে, দরিদ্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছে, বৃক্ষরোপণ করেছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে তারা জনগণকে সেবা দেয়ার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, সেবাকে কোন নির্দিষ্ট দিন, সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে প্রতিটি দিনকে সেবার দিনে পরিণত করতে হবে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য আজীবন কাজ করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। তিনি তাদের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অনুসরণ করে আমরা দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে সেবা সপ্তাহ পালনে উদ্বুদ্ধ হয়েছি।
অনুষ্ঠানে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ১০ হাজার, জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এছাড়া, অসহায় পরিবারের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি থাকবে সারা বছরের খাতা, কলম এবং অন্যান্য শিক্ষা সামগ্রী।
সুত্রঃ বাংলাদেশ পুলিশ প্রেস।