বিনোদন ডেস্কঃ প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির ৭০ তম শুভ জন্মদিন আজ। ১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায় এমন একটি দিনেই পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিলো এই প্রখ্যাত অভিনেতার।
অসংখ্য জনপ্রিয় মঞ্চ, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শিল্প-সংস্কৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে আসন গেড়ে নেন এই অভিনেতা। তার অভিনয়ের শুরুটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ফরীদি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল-দীনের নজরে পড়েন।
১৯৭৬ সালে নাট্যজন সেলিম আল দীন-এর উদ্যোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় নাট্যোৎসব। আর হুমায়ুন ফরীদি ছিলেন এর অন্যতম প্রধান সংগঠক। এই উৎসবে তার নিজের রচনায় এবং নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে একটি নাটক। ওই সময় নাটকটি সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। এরপর সেখানে প্রথম নাটকের সুবাদে পরিচয় ঘটে ঢাকা থিয়েটারের নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সঙ্গে। মূলত এখান থেকে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় যাত্রা শুরু।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে নিখোঁজ সংবাদ, হঠাৎ একদিন, পাথর সময়, সংশপ্তক, সমুদ্রে গাংচিল, কাছের মানুষ, মোহনা, নীলনকশাল সন্ধানে, দূরবীণ দিয়ে দেখুন, ভাঙ্গনের শব্দ শুনি, কোথাও কেউ নেই, সাত আসমানের সিঁড়ি, সেতু কাহিনী, ভবেরহাট, শৃঙ্খল, জহুরা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, প্রতিধ্বনি, গুপ্তধন, সেই চোখ, আমাদের নুরুল হুদা প্রভৃতি।
নব্বই দশকে এসে নাম লিখিয়েছিলেন বাণিজ্যিক ধারার বাংলা চলচ্চিত্রে। প্রথম সিনেমা ‘হুলিয়া’ দিয়ে অভিনয় শুরু বাংলা চলচ্চিত্রে। একসময় নায়কের চেয়ে বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ভিলেন হুমায়ুন ফরীদি বেশি প্রিয় হয়ে ওঠেন। বলা যায়, জাদুময় এক অভিনেতা হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। যার ফলে রেখে গেছেন অগণিত ভক্ত, অনুরাগী।
তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাস, দহন, লড়াকু, দিনমজুর, বীর পুরুষ, বিশ্বপ্রেমিক, আজকের হিটলার, দুর্জয়, শাসন, আনন্দ অশ্রু, মায়ের অধিকার, প্রাণের চেয়ে প্রিয়, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, প্রবেশ নিষেধ, ভণ্ড, অধিকার চাই, মিথ্যার মৃত্যু, ব্যাচেলর, শ্যামল ছায়া ও মেহেরজান প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন হুমায়ূন ফরীদি।