গণঅভ্যুত্থানের সময় কারাগার থেকে পলাতক ২২ শতাধিক আসামিদের মধ্যে ১৫শর মতো গ্রেপ্তার করা হলেও এখনও সাত শতাধিক আসামি অধরা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার কারা অধিদপ্তরের বর্তমান কারাগারের পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় কারাগার থেকে পলাতক ২২ শতাধিক আসামিদের মধ্যে ১৫শর মতো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনো অধরা রয়েছে ৭০০ আসামি।
তিনি বলেন, কারাগার থেকে এখন পর্যন্ত আলোচিত ১৭৪ জন আসামিকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১১ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীও মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের। আমরা আদালতের নির্দেশ মানতে বাধ্য।
তিনি আরো বলেন, গত ৩ মাসে কারাগারসমূহে অধিকতর স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা আনায়নের লক্ষ্যে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কারা অভ্যন্তরের সব ধরনের তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। কারা অভ্যন্তরে মাদক দ্রব্যের প্রবেশ রোধকল্পে ঝুঁকিপূর্ণ কারাগারসমূহে ডগ স্কোয়াড মোতায়েন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
সৎ এবং যোগ্যতাসম্পন্ন অফিসার এবং কারারক্ষীদের তাদের পেশাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে কারা সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন কারাগারসমূহে পদায়ন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সবসময় বন্দীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ নিশ্চিতের জন্য বেশ কয়েকটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
বন্দী ব্যবস্থাপনা অধিকতর স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে কারাগার ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সফটওয়্যারসহ, আর এফ আইডি এবং জিপিএস ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, সেবা প্রত্যাশীদের সহায়তার জন্য ২৪ ঘণ্টা হটলাইন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নানা মহলের দাবির প্রেক্ষিতে কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত লোগো যেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।
কারাগার নিয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, বিশেষ প্রকৃতির বন্দিদের ওয়ার্ড বা সেলে মোবাইল ফোন জ্যামার স্থাপন করাসহ সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রতিদিন কয়েক বার তল্লাশি করা হয়। ফলে তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের কোনও সুযোগ নেই। বিধি মোতাবেক শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দিরা কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে, আয়েশি জীবনযাপনের কোনও সুযোগ নেই। সম্প্রতি এসব বিষয়ে কিছু সংবাদ প্রচার করার ফলে জনমনে কারাগার সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য পৌঁছাচ্ছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ মনে করে। এসব ব্যাপারে প্রমাণ সাপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম