আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তানে গত কয়েকদিন ধরে চলা সরকার বিরোধী বিক্ষোভের জেরে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬৪ জন নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের দমাতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চলছে ব্যাপক ধরপাকড়। কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, সব মিলিয়ে সহিংসতার ঘটনায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিদেশিসহ প্রায় ৬ হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে।
গত ২ জানুয়ারি জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে। পরে আরও কিছু দাবি আন্দোলনে যুক্ত হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সহিংসতায়।
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিন। দেশজুড়ে জারি হয় দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা। এতেও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধদের। এমন পরিস্থিতিতে আলমাতি শহরে চালানো হয়েছে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ। বলা হচ্ছে, ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এমন পরিস্থিতি দেখেনি দেশটির জনগণ।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, রক্তক্ষয়ী এই সহিংসতায় আনুমানিক ১৯৮ মিলিয়ন ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে এবং প্রায় ৪০০ যানবাহন ধ্বংস করা হয়েছে।
কাজাখস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা স্পুটনিক জানায়, সহিংসতায় দুই শিশুসহ মোট ১৬৪ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির প্রধান শহর আলমাতিতে সহিংসতা মারাত্মক আকার ধারণ করে। সেখানে ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বিক্ষোভ দমাতে দেশজুড়ে বড় পরিসরে অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানী নুর সুলতানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
এর আগে কাজাখস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদেরকে কোনো রকম সতর্কতা ছাড়াই দেখামাত্র গুলির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাসেম জোমার্ট তোকায়েভ।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েরলান টুরগুমবায়েভ জানিয়েছেন, অবস্থা স্থিতিশীল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সন্ত্রাসবিরোধী আভিযান চালানো হচ্ছে।