সারা বিশ্বে যখন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয় তারপর থেকেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দাবি করে আসছিলেন যে, ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকলেই এই প্রাণঘাতী ভাইরাস মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ। আর তার পর থেকেই বহু করোনা আক্রান্ত রোগী ১৪ দিনের আইসোলেশনকেই করোনা মুক্তির অব্যর্থ দাওয়াই হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন।
তবে এবার সেই তথ্যে গুড়ে বালি ঢাললেন ইতালির গবেষকরা। তারা দাবি করেছেন, দুই সপ্তাহে করোনা মুক্তি ঘটবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। বস্তুত করোনা নির্মূল হতে অন্তত এক মাস কিংবা তার বেশি সময় লেগে যেতে পারে। তাই ভাইরাস শরীরে সক্রিয় নেই তা নিশ্চিত হতে চার সপ্তাহ বাদে আবার করোনা টেস্ট করানো উচিত। শুধু তাই নয়, তাঁরা সতর্ক করেছেন যে অনেক ক্ষেত্রে মারণ ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ভুলও হতে পারে।
গবেষকদের মতে, ‘প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ২০ জনের সোয়াব নমুনার ‘নেগেটিভ’ ফল ‘ফলস’ বা ‘ভুল’ হতে পারে। যার ফলে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া রুগীরাও অন্যকে সংক্রামিত করতে পারেন।
বিএমজি ওপেন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতালির গবেষকরা গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত রেজিও এমেলিয়া প্রদেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার করোনা রুগীকে নিয়ে এক গবেষণা চালিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১ হাজার ২৬০ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন এবং ৪০০-র বেশি রুগী করোনার ছোবলে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েছেন। প্রথম করোনা নমুনা পরীক্ষায় শরীরে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পড়ে তা সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হতে সময় লেগেছিল গড়ে ৩১ দিন।
গবেষকদলের নেতৃত্বে থাকা ফ্রান্সেস্কো ভেনচুরেলি জানিয়েছেন, ‘ভাইরাসটি সম্পূর্ণ নির্মূল হতে কতদিন সময় নেয়, তা জানতে আক্রান্তদের বেশ কয়েকবার করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। প্রথমবার পরীক্ষা করার ১৫ দিন পর, দ্বিতীয় পরীক্ষার ১৪ দিন পর এবং তৃতীয় পরীক্ষার ৯ দিন পর। তাতে দেখা যায়, ৬১ শতাংশ রুগীর শরীর থেকে ভাইরাসটি নির্মূল হয়েছে। ভাইরাস দূর হতে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৬ দিন সময় লাগতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে সময়টা আরও বাড়তে পারে।’