জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ করোনা ভাইরাস মহামারিতে মেস ভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সম্পূর্ণ অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে টিউশনি ও খণ্ডকালীন কাজ বন্ধ থাকায় বাসা ভাড়া জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অভিযোগ উঠছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা শিক্ষার্থীদের বাসা ভাড়া দিতে রীতিমত হুমকি-ধমকিও দিচ্ছেন বাসাবাড়ির মালিকরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে থানার সহযোগিতা নেওয়ার কথা বলা হলেও, থানা থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।
পুরান ঢাকার কলতাবাজারে বিশ্ববিদ্যালয় লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বির তত্ত্বাবধানে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী মিলে একটি মেস বাসা ভাড়া করেন। তিনি বলেন, লকডাউনের দ্বিতীয় মাস থেকেই বাসার মালিক ফোন দিয়ে বাসা ভাড়া চাচ্ছে। কিন্তু মেসের অন্য সদস্যরা দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকায় মেস ভাড়া দেওয়ার অবস্থায় নেই। তারা ভাড়া দিতে অপারগ। এদিকে বাড়িওয়ালা বাসা থেকে মালপত্র বাহিরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এই মুহুর্তে ঢাকায় গিয়ে মালপত্র সরানো সম্ভব না, ভাড়া দেয়াও সম্ভব না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরামর্শ মতে, নিকটস্থ থানায় সাহায্যের জন্য যোগাযোগ করলে, বাড়িওয়ালার ফোন না ধরার পরামর্শ দেন পুলিশ।
লক্ষ্মীবাজারের রস-মিষ্টি গলিতে মেস ভাড়া নিয়ে থাকেন সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার। তিনি জানান, পুরান ঢাকায় বাসার মালিকরা ব্যাচেলর ভাড়া দিতে চান না। অনেক কষ্টে মেস ভাড়া করেছি। বাসার মালিক লকডাউনের পরের মাস থেকেই বাসা ভাড়ার জন্য ফোন দিচ্ছে। প্রথম দুই মাসের ভাড়া দিলেও গত মাস থেকে ভাড়া দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কথামতো যদি থানায় ফোন দেই, তাহলে ভবিষ্যতে আর বাসা ভাড়া দিতে চাইবে না মালিকরা। বাড়িওয়ালার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হবে। হল না থাকায় আমরা চরম সঙ্কটে পড়েছি।
শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া সংকট নিয়ে বেশ কয়েকজন বাসা মালিকের সাথে কথা হয় ডিজিটাল বাংলা নিউজের। এর মধ্যে কয়েকজন বাড়িওয়ালা জানান, বাসা ভাড়ার টাকা দিয়ে তাদের পরিবার চলে। ভাড়ার টাকা না হলে তাদের পরিবার চালাতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের শিক্ষার্থী বেশি। হল সুবিধা না থাকায় স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। ক্যাম্পাস খুললেই এই ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবো। বেশি পরিমাণ শিক্ষার্থীর সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রীয়ভাবেই করতে হবে। এর মধ্যেও যদি কোনো শিক্ষার্থী বাড়ি ভাড়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়, আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেবো। পাশের থানায় জানালে তারাও সহযোগিতা করবে।
উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, ক্যাম্পাস খুললেই আমরা বাসা ভাড়া সমস্যা নিয়ে কাজ করবো। এখন কোনো সমস্যা হলে প্রক্টরকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। আমরা এখন শিক্ষার্থীদের খাবার ও চিকিৎসা সঙ্কট নিয়ে কাজ করছি।