সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ওপর প্রচলিত অ্যান্টিভাইরাস ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। এই ওষুধটি তাদের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির দুই শীর্ষ চিকিৎসক।
ওই ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে রোগীদের ওপর প্রয়োগ করেছে একটি বিশেষজ্ঞদল। এই দলটির একজন সদস্য হলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিস মেডিক্যাল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জর্জ থম্পসন।
জানা গেছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসে পজিটিভ ধরা পড়েছে এমন একজন নারীর ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়।
থম্পসন শুক্রবার সায়েন্স ম্যাগাজিনকে এ বিষয়ে বলেন, আমরা ভেবেছিলাম আক্রান্তরা মারা যাবেন। তিনি জানান, ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করার ৩৬ ঘণ্টা পর ডাক্তাররা তাকে ‘রেমডেসিভির’ নামের ওষুধ দিয়ে চিকিত্সা করার সিদ্ধান্ত নেন।
ওষুধটি আন্তঃনালী ড্রিপের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। এটি ‘আরএনএ পলিমেরেজ’ নামক একটি এনজাইমের কার্যকারিতা বন্ধ করে দেয়। সে সময় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। এ কারণে চিকিত্সকরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য এফডিএ-এর কাছ থেকে অনুমতি সংগ্রহ করে। একদিনের মধ্যেই ওই নারী অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে।ওই রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কি-না তা প্রকাশ করেননি থমসন।
গোপনীয়তার রক্ষার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে থমসন জানান যে, তিনি ‘ভালো আছেন’। একইভাবে ‘রেমডেসিভির’ নামের ওষুধটি ১৪ মার্কিনিকে সুস্থ হতে সহায়তা করেছে। এই মার্কিনিরা ডায়মন্ড প্রিন্সেস ক্রুজ জাহাজে ভ্রমণের সময় তাদের দেহে করোনভাইরাস ধরা পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটসের সহকারী সার্জন জেনারেল এবং ফুসফুস বিশেষজ্ঞ রিচার্ড চাইল্ডস শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়েছেন, জাপানের একটি হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে ওষুধটি দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছিল।
তিনি জানান, এর মধ্যে বেশির ভাগ রোগীরই অল্প সময়ের মধ্যেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুই সপ্তাহ পরেও কেউ মারা যাননি। তাদের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছে। এটা আশ্চর্যজনক বিষয় ছিল। তবে, উভয় চিকিত্সক স্বীকার করেছেন যে ‘রেমডেসিভির’-এর ক্ষেত্রে আরো পরীক্ষা করা দরকার।
থম্পসন বলেছেন, ওষুধটি নির্দিষ্ট কিছু রোগীদের মধ্যে লিভারের বিষাক্ততা সৃষ্টি করতে পারে।তিনি জানান, অন্যান্য সংস্থাও পরীক্ষামূলকভাবে ওষুধ নিয়ে এগিয়ে আসছে, যা কার্যকর হতে পারে।