চলমান পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী ধারণা ছিল, করোনাভাইরাস যে কারও শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তবে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত না হওয়া অনেকের শরীরে এমন এক ধরনের ‘টি-সেল’ রয়েছে, যেটি এই ভাইরাসকে প্রতিহত করতে সক্ষম। অর্থাৎ যেসব মানুষের দেহে ভাইরাসবিরোধী ‘টি সেল’ রয়েছে তাদের করোনা আক্রান্ত করতে পারবে না। কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সম্ভবত এসব ব্যক্তি অন্য কোনো করোনাভাইরাস দ্বারা এর আগে সংক্রমিত হয়েছিল।
বিজ্ঞানীরা আরেকটি আশার কথাও শুনিয়েছেন। সেটি হলো, মৃদু উপসর্গ থাকা ব্যক্তির শরীরেও এমন ‘টি-সেল’ এবং ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি হতে পারে, যেটি তাকে ভবিষ্যৎ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম।
সম্প্রতি সেল জার্নালে এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। গবেষণায় বলা হয়, বিভিন্ন ধারার ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার কারণে অনেক মানুষের শরীরে ভাইরাসবিরোধী টি সেল তৈরি হয়। এই সেল করোনা রুখে দিতে সক্ষম। বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্ট বলছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই সক্ষমতাকে বলা হয় ‘ক্রস-রিয়েক্টিভিটি’।
কিন্তু এই ‘ক্রস-রিয়েক্টিভিটি’ কতটা শক্তিশালী কিংবা অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতা থাকলে এটা কতটা সুরক্ষা দেবে, তা নিশ্চিত হতে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
গবেষণায় মোট ৪০ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাদের মধ্যে ২০ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে উঠেছে। বাকি ২০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে। অর্থাৎ এই ২০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা থেকে সেরে উঠা ২০ জনের শরীরেই শ্বেত রক্তকণিকা এবং অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালে যেসব নমুনা নেওয়া ছিল, সেগুলোর ৫০ শতাংশের মধ্যেও ‘সিডি৪+’ নামের ‘টি-সেল’ পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ‘টি-সেল’ করোনাভাইরাসকে শনাক্ত এবং প্রতিহত করতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যাদের শরীরে এই ‘টি-সেল’ আগে থেকেই আছে, তারা করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ৬৭ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণ গেছে ৩ লাখ ৯৩ হাজারের বেশি মানুষের।