বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক ও সুপিরিচিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানী মারা গেছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার (২০ জুন) সকালে ১০.৩০ দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার ছেলে সাগর লোহানী গণমাধ্যমকে জানান আজ শনিবার (২০ জুন) সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়।
তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান ও দাফন কখন এবং কোথায় সম্পন্ন হবে, সেবিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানান সাগর লোহানী।
ফুসফুস ও কিডনির জটিলতা ছাড়াও হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের সমস্যাতেও ভুগছিলেন ৮৬ বছর বয়সী প্রবীণ এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। গতকাল শুক্রবার তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এরআগে গত ১৭ জুন সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কামাল লোহানীর প্রকৃত নাম আবু নাইম মো. মোস্তফা কামাল খান লোহানী। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ও পরে বায়ান্ন সালে পাবনা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন । সে সময়েই ভাষা আন্দোলনে জড়িত হবার মধ্য দিয়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে।
পরে কয়েক দফা জেল খেটেছেন এবং একই সাথে কারাগারে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমেদের মতো নেতাদেরও সাথেও। এক পর্যায়ে জড়িত হন বামপন্থী ধারার রাজনীতিতে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলছেন, নীতি ও আদর্শে অবিচল থেকে সবসময় দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করেছেন তিনি।
তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন। ১৯৬২ সালে কামাল লোহানী ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে যোগ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দৈনিক মিল্লাত দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু, এরপর আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন তিনি।