প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস হানা দিয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক শহর মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে। এরইমধ্যে মারাও গেছেন একজন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই বস্তির আটটি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ধারাভির ওই ব্যক্তিকে মঙ্গলবার প্রথমে সিওন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কস্তুরবা গান্ধী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সে তোলার আগেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, মুম্বাইয়ের বিশালকায় ধারাভি বস্তির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের নমুনায় করোনাভাইরাসের খোঁজ পাওয়ার পরে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাণিজ্য নগরীতে। ভারতে করোনা সংক্রমণ তালিকার শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্রে। তবে এ ঘটনায় মুম্বাই শহরে সংক্রমণের তীব্রতা বহু গুন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
এশিয়ার বৃহত্তম হিসেবে পরিচিত ৬১৩ একর জমির উপরে ছড়িয়ে থাকা ধারাভি বস্তিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এককথায় অসম্ভব। তার জেরে ভয়াবহ সংক্রমণ বস্তির ১৫ লাখের বেশি বাসিন্দার মধ্যে কী বিশাল সংকট তৈরি করবে, তা ভেবে শিউরে উঠছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বস্তিবাসীর জীবনযাপনে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাস্তবে সম্ভব নয়। বাসস্থানে নেই পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও চলাচলের সুবিধা। রয়েছে পানির তীব্র অভাবও। ধারাভিতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাওয়ায় অচিরে গোটা মুম্বাই শহর ও সংলগ্ন এলাকা যে গভীর বিপদের মুখে পড়তে চলেছে, তা সহজেই অনুমেয়।
উল্লেখ্য, বুধবার ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪৩৭ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এটাই একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। এদিন সেখানে মারা গেছেন অন্তত ছয়জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১।
ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৪। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১৪৩ জন।