মেজর সিনহা হত্যাকান্ডে গ্রেপ্তারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এখন টক অব দ্যা কানট্রি। হত্যা করা ছাড়াও প্রদীপের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ উঠেছে তার অবৈধ সম্পদের। এখন পর্যন্ত ওসি প্রদীপের যে সম্পদের পরিমান আবিস্কৃত হয়েছে তা জেনে বিস্মিত সমগ্র জাতী। তদন্ত চলছে প্রদীপের সম্পদের উৎস সন্ধানের। একজন ওসি যে বেতন পান তা দিয়ে এই সম্পদত নয়ই, একটি ফ্লাট কেনাও কঠিন। সম্পদের হিসাব পাওয়া গেলে শুধু প্রদীপ নয়, অনেক ওসি’রই বিচার করতে হবে। সব বাদ দিয়ে শুধু ওসি’দের সম্পদের হিসাব নিলেই দুর্নীতির চিত্রটি বের হয়ে যাবে। বিষয়টি এখন যতটা না ওসি প্রদীপের অবৈধ সম্পদের তার চেয়ে বেশী আলোচনা হচ্ছে সরকারের ব্যর্থতার। আসলেই কি সরকার ব্যর্থ? সরকার টানা এগারো বছর ক্ষমতায় কিন্তু, পুলিশ বাহিনীর দুর্নীতি কি শুধু এই সরকারের আমলেই হয়েছে? এত পরিমান সম্পদ অর্জন করতে কত সময় লেগেছে? থানার ওসি সাহেবরাই একা দুর্নীতি করেনা, এমন দুর্নীতি করতে হলে আরও লোকবল লাগে, তারা কারা? টেকনাফ চোরাচালান আর মাদকের ট্রেনজিট পয়েন্ট, এই পয়েন্টে পোষ্টিং নিতে পুলিশের উচ্চপদের সহযোগিতা লাগে। কারা ওসি প্রদীপকে বার বার এই থানায় নিয়োগ দিল? ওসি নিয়োগ, বদলিতে কোন মন্ত্রী বা নেতা লাগেনা। ওসি বদল হয় এস পি আর কমিশনারের অনুমোদনে। তাহলে প্রদীপের অপকর্মের দায়টি রাজনীতির উপর কেন? বর্তমান সরকারের আমলে অন্তত ওসি’রা ধরা পরছে। আইনের হাতেও সোপর্দ হয়েছে আইনের পুলিশ। এমনটিত আগে হয়নি! তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ কি মতলবি না রাজনীতি? মেজর সিনহাকে হত্যা ছিল মাদক পাচারের পথ নীজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখা। মাদক থেকে আমদানির অর্থ কি ওসি প্রদীপ একাই খেয়েছে? আমিনা ও, আবার ওনা আমি এই বিতর্কে জনগন জড়াবে কেন। অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থের খোঁজ বের করে জনগনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়াই সরকারের কর্তব্য। বর্তমান সরকার সেই খোঁজেই নেমেছে। কিন্তু অপরাধ ঠেকাতে যাদের দেওয়া হলো, তারাই যদি অপরাধ করে তাহলে দেশ এখন সংকটে। এই সংকট উত্তরনের জন্য দরকার জনগনের ঐক্য। দেশপ্রেমিক নাগরিকের সম্মিলিত ঐক্য। দুঃখজনকভাবে এখন অপরাধীকে দায়ী না করে দায়ী করা হচ্ছে সরকারকেই। কেউ কোন কিছু জানেনা, সরকার অপরাধী ধরলেই আলোচনা শুরু হয় সরকার ব্যর্থ। এই প্রচারনা সাধারন মানুষ বিশ্বাসও করে, সত্যটি হারিয়ে যায় বিতর্কে। যদি সঠিক তদন্ত হয় এবং, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্ত্তাব্যক্তিরা নির্দেশ পালন করেন তাহলে দেশটাই বদলে যাবে। ইঁদুর গোলা ভেদ করে ধান খায়, এখন বাংলাদেশে জাতীয় ভান্ডার ভেদ করে ঢুকে গেছে ইঁদুর। ছিদ্র বন্ধ হলেই ইঁদুর মরবে না হয় না! জনগনের দাবি সরকারের কাছে, সরকারকেই শুদ্ধ হতে হবে সমালোচকের মুখে ছাই ঢেলে। বর্তমান সরকার সেই উদ্যোগটি নিয়েছে বলেই আলোচনা এখন বেশী হচ্ছে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
রাজনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক
টরেন্টো, কানাডা
১৩ জুলাই ২০২০।