‘ডিবি অফিসে যাকে তাকে ধরে নিয়ে যাবেন, তারপর খাবার টেবিলে বসাবেন। এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না’ এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত বলেন, ধরে নিয়ে ডিবিতে খাবার টেবিলে বসিয়ে খাইয়ে ছবি দেখানো জাতীয় লেভেলের মশকরা।
বিক্ষোভের সময় ছাত্রদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার (২৯ জুলাই) এমন মন্তব্য করেন।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, “আপনি (ডিবি প্রধান) একজন ডিবি অফিসারের রুমে কাটা চামচ দিয়ে খাবার খাওয়াচ্ছেন, সেসবের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন; এটা কি জাতির সাথে মশকরা করা নয়?”
তিনি আরও বলেন, “আপনাকে এসব কে করতে বলেছে? এভাবে জাতির সঙ্গে মশকরা করবেন না।”
রিটের আদেশের জন্য আগামীকাল (৩০ জুলাই) দিন ধার্য করা হয়েছে।
রোববার (২৮ জুলাই) ‘নিরাপত্তাজনিত কারণ’ দেখিয়ে ডিবি হেফাজতে নেওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে এক টেবিলে বসে নাস্তা করার কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন বলে তাদের ডিবি কার্যালয়ে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন– এরকম ক্যাপশন দিয়ে ফেসবুকে ছবিগুলো পোস্ট করেন ডিবি প্রধান হারুন-অর রশীদ।
গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে হাসপাতাল থেকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরে শনিবার (২৭ জুলাই) মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমকেও ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচিতে গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে এবং গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের মুক্তির নির্দেশনা চেয়ে আজ সোমবার (২৯ জুলাই) হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে।
আজ (২৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা ও মঞ্জুর আল মতিন এ আবেদন করেন।
আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সেনাপ্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম