মোঃ সদরুল কাদির (শাওন), সাতক্ষীরা:: র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এন.এস.আই) এর যৌথ অভিযানে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ২৯ সদস্যকে আটক করেছে।
শুক্রবার (২৪ মে) সকালে কলারোয়া থানার পার্শ্ববর্তী একটি ভবনে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের উত্তর ঠিক করার কাজে নিয়োজিত অবস্থায় পরীক্ষার্থী ও প্রশ্ন ফাঁস চক্রের এসব সদস্যকে আটক করা হয়।
র্যাব-৬ সাতক্ষীরা সিপিসি কমান্ডার লে. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহনেচ্ছুরা জড়ো হয় কলারোয়া উপজেলা সদরের সোনালী সুপার মার্কেট ভবনের কীডস ক্লাব সেন্টারে। তারা সেখানে রাত্রিযাপন করে।
তিনি আরও জানান, রাতভর এবং সকালে মোবাইল ফোনে তাদের কাছে আসা প্রশ্নপত্র ব্লাকবোর্ডে লিখে সাথে সাথে তার উত্তরও নির্দেশ করা হতে থাকে। অংশগ্রহনেচ্ছুরা তা শিখে নিতে থাকেন।
এমন খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা ভবনটি ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে প্রথমে ২২ জন পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও ৭ জনসহ ২৯ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ওই চক্রের মূল হোতা জনতা ব্যাংক সেনেরগাতী, সাতক্ষীরার শাখার ম্যানেজার কলারোয়ার আবতাবুজ্জামানও রয়েছেন।
আবতাবুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে এধরনের চক্রের সাথে জড়িত। অবৈধভাবে উপার্জন করা টাকা দিয়ে ঢাকায় ফ্লাট, কলারোয়ায় কোটি টাকার বাড়িসহ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
জানা গেছে, তিনি বিশ্ববদ্যালয়ে পড়াকালিন সময়ে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সাথে যুক্ত ছিলেন। ওই সময় থেকেই তিনি এধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
র্যাব জানায়, তারা জানতে পেরেছেন যে ঢাকায় বসে একটি প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে তাদের কাছে মোবাইল ফোনে প্রশ্ন ও তার উত্তর বলে দেবে। এসব প্রশ্ন ও উত্তর ব্লাকবোর্ডে লিখে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এজন্য সিন্ডিকেটের হাতে অগ্রিম পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। বাকি টাকা পরীক্ষা শেষে দেওয়ার কথা রয়েছে। এবিষয়ে র্যাবের পক্ষ থেকে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছে।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, কলারোয়া থেকে ফাঁসচক্রের হোতাসহ পরীক্ষার্থীদের আটক করার সময় ব্লাকবোর্ডে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করে দেওয়া হচ্ছিল। পরবর্তীতে পরীক্ষা শেষে মূল প্রশ্ন পত্রের সাথে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে।