বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বসবাস করছে। প্রতি বছর না হলেও প্রায় বছরই এদের অনেকে দেশে যায়। যারা স্থায়ীভাবে বিদেশে আবাসন গড়েছে তাদের সংখ্যাটিও কমনা। দেশে গিয়ে একটি ফোনের সিম কিনতেও এন আই ডি লাগে। ব্যংক একাউন্ট খুলতে হলেও বিদেশী পাসপোর্ট দেখাতে হয়। এই কার্ড ছাড়া জায়গা জমী বিক্রি করাও কঠিন। নাগরিক হিসাবে বিদেশী পাসপোর্টে যেতে No Visa Required সীল দেয়। কিন্তু দেশের নাগরিকত্বের সনদ নেই কারোই। এই বিশাল জনগোষ্ঠী নাগরিক সুবিধা ছাড়াও ভোটাধিকার বঞ্চিত। অথচ দেশের রেমিটেন্স উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশীরাই এগিয়ে।
প্রতিবছর বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী এই রেমিটেন্স প্রাপ্তির কথা গর্ব করে বলেন। কিন্তু প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদানের কোন উদ্যোগ আজও গ্রহন করা হয়নি। দেশ এখন ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে বলে সরকার সাফল্য বিবেচনা করে। কিন্তু দেড় কোটি বাংলাদেশী কে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে সরকার কোন আগ্রহ নেই। প্রবাসে বহুবার এই দাবী উঠেছে, এবং সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ের কর্ত্তাব্যক্তিদের সাথেও মতবিনিময় হয়েছে। শুধু আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কোন কার্যকর পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। বিষয়টি জটিল নয় তবে ব্যয়সাপেক্ষ। এক কালীন অর্থ ব্যয় করে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করা হলে দেশ বরং লাভবানই হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। প্রাবাসীরা দেশে লগ্নি খাটাতে আগ্রহী হলে বিদেশী ঋনের নির্ভরতা লাঘব হবে। সরকার উদ্যোগ নিলে কাজটি করা কঠিন কিছু নয়। জন্ম নিবন্ধন যদি দুতাবাস দিতে পারে, জাতীয় পরিচয় পত্র দেওয়াও সম্ভব হবে।
বহু দেশের প্রবাসী নাগরিক বিদেশ থেকেই ভোট প্রদানের সুযোগ পায়। প্রযুক্তির যুগে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করার কাজটি মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। প্রয়োজন শুধু উদ্যোগের। বাংলাদেশ পদ্মা সেতু নির্মান করে প্রযুক্তির সক্ষমতা দেখিয়েছে। জাতীয় পরিচয় প্রদানের প্রযুক্তি সফল হবেনা তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। আশাকরি সরকার এবং সংশ্লিষ্ঠ কর্ত্তাব্যক্তিরা বিষয়টি ভেবে দেখবেন।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা।