এ যেন রুপকথার গল্প। ৩৪ সদস্যের পরিবার নিয়ে দিশেহারা সানিনিউ লাইজার কোটিপতি বনে গেলেন এক রাতেই। অনেকটা আলাদীনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতো ঘটনা। তানজানিয়ার পাহাড়ে হঠাৎ খুঁজে পেয়েছেন বিরল দুই রত্নপাথর।
তানজানাইট নামের সেই পাথর বিক্রি করে ২৯ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এই ক্ষুদ্র খনি ব্যবসায়ী। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন খোদ সরকার প্রধান। রত্ন বিক্রির টাকায় গ্রামে স্কুল ও শপিং মল নির্মাণ করতে চান সানিনিউ লাইজার।
খনি সমৃদ্ধ মানায়ারা পাহাড়ে ৯ ও ৫ কেজি ওজনের এই বিরল রত্ন দু’টির সন্ধান পান লাইজার। যা এ যাবৎকালে দেশটিতে পাওয়া সবচেয়ে বড় তানজানাইট পাথর। সরকারের পক্ষ থেকেই ৩৪ লাখ ডলারে কিনে নেয়া হয়েছে পাথর দুটি; বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৯ কোটি টাকা।
সানিনিউ লাইজার বলেন, সৃষ্ঠিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই কারণ এই পাথর আমার জন্য সম্মান নিয়ে এসেছে। আমি শিক্ষিত নই, তাই এই টাকায় বাড়ির পাশে একটি স্কুল নির্মাণ করতে চাই। পাশাপাশি একটি শপিংমল করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।
তানজানিয়ায় ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলি। দেশটির ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়ার জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খনি ব্যবসায়ীকে অনুমোদন দেন খনিজ সম্পদ আহরণের জন্য। ফলে লাইজারের মতো অনেকেই এই ব্যবসা করে থাকেন।
লাইজার যে এলাকায় এই খনি খনন করে থাকেন, সেই এলাকায় পাওয়া যায় এই রত্নপাথর তানজানিয়াট। লাইজার এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি তানজানিয়াট পেয়েছেন। এর একটির ওজন ৯ কেজি ২০০ গ্রাম আর অন্যটির ওজন ৫ কেজি ৮০০ গ্রাম। গত বুধবার দেশটির মানিয়ারা এলাকায় পাথর দুটি বিক্রি করেন তিনি। পাথর দুটি কিনেছে দেশটির রত্নপাথর-সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়।
এই পাথর পাওয়া ও তা বিক্রি করার ঘটনা রটে গেছে সারা দেশে। খোদ প্রেসিডেন্ট তাঁকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর পেছনে অবশ্য যথেষ্ট কারণও রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, তানজানিয়াট অন্যতম একটি দুর্লভ পাথর। অলংকার তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয় এই পাথর। স্বচ্ছতা ও রঙের ওপর নির্ভর করে এর দামের হেরফের হয়ে থাকে। এত বড় তানজানিয়াট আর কখনো পাওয়া যায়নি তানজানিয়ায়। এর আগে সবচেয়ে যে বড় পাথরটি পাওয়া গিয়েছিল, সেটির ওজন ছিল ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম। স্থানীয় ভূতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, আগামী ২০ বছর এই পাথর সরবরাহ করতে পারবে তানজানিয়া।
সাধারণত অলঙ্কার তৈরিতে ব্যবহার করা হয় তানজানাইট নামের এই পাথর। কালো, বেগুনী ও নীল রঙের এই পাথর পৃথিবীর বিরল রত্নের একটি। যা আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।