আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউক্রেইনের দুই অঞ্চলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনা পাঠানোর নির্দেশের পর নিষেধাজ্ঞার বানে জর্জরিত হচ্ছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাশিয়ার উপর সবার প্রথমে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসে যুক্তরাজ্যের। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নিষেধাজ্ঞা এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও। রাশিয়ার সঙ্গে গ্যাস পাইপলাইনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে জার্মানি। কানাডাও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেলত বলেছেন, ইউক্রেনের দু’টি প্রজাতন্ত্রকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার রুশ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ইইউভুক্ত দেশগুলো সর্বসম্মতিক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার দেশ যুদ্ধে জড়াতে চায় না। তবে নেটো অঞ্চলের এক ইঞ্চি ভূমিও ছাড়বে না।
ভিন্ন পন্থায় ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর অভিযোগ তুলে রাশিয়ার ওপর প্রথম ধাপে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কানাডা। রাশিয়ার স্বীকৃত রাষ্ট্র লুহানস্ক এবং দনেস্কে সব ধরনের অর্থায়ন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্যদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার।
বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার তিনটি ব্যাংক এবং তিন ধনকুবেরের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রোসিয়া, আইএস ব্যাংক, জেনারেল ব্যাংক, প্রোমসভায়াজ ব্যাংক এবং ব্ল্যাক সি ব্যাংকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন জনসন। আর তিন ধনকুবের হচ্ছেন- গেনেদি তিমচেনঙ্কো, বরিস রোটেনবার্গ এবং ইগোর রোটেনবার্গ। নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাজ্যে তাদের সব সম্পদ জব্দ করা হবে এবং দেশটিতে তাদের ভ্রমণও নিষিদ্ধ থাকবে। যুক্তরাজ্যের কোনো নাগরিক তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করা কিংবা সম্পর্ক রাখতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউক্রেইন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোতে যোগ দিতে চাওয়ার পর থেকে উত্তেজনা চলছে কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে। রাশিয়া কোনোভাবেই তাদের পাশের দেশে নেটোকে জায়গা দিতে চায় না। টানটান উত্তেজনার মধ্যে সোমবার রাশিয়া ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়। এরপর সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। সোমবার দোনেৎস্ক শহরের ভেতর দিয়ে রাশিয়ার ট্যাংক এবং সামরিক বহর যেতে দেখা যাওয়ার খবর মেলার পরপরই রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার খবর আসতে থাকে বিবিসি, সিএনএনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।