দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। কেন্দ্রটিকে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সিনক্রোনাইজিং বা সংযুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানির (বিসিপিসিএল) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম খোরশেদুল আলম কেন্দ্রটির উৎপাদন শুরুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, সফলভাবে কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। বিভিন্ন ধাপে এখন উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে সুবিধাজনক সময়ে কেন্দ্রটি উদ্বোধন করবেন তিনি। ইতোমধ্যে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে।’
প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, ‘আজকে বেশ কিছুক্ষণ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালানো হয়েছে। এখন ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যাচ্ছে গ্রিডে। দুপুরের পর আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেবো। আগামীকাল মঙ্গলবার আবারও চালাবো। প্রতিদিন অল্প অল্প করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে, এরপর বাড়ানো হবে। পাশাপাশি যন্ত্রপাতিগুলোও চলবে এই মাসজুড়েই।’
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হওয়া নিয়ে এক ধরনের উচ্ছ্বাস ছিল সবার মাঝে। কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র তো বটেই, এটি দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। সব মিলিয়ে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। এর আগে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ছিল ৪৫০ মেগাওয়াট, যা গ্যাসচালিত।
আমদানি করা কয়লায় উৎপাদনের জন্য পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশ এবং চীনের সমান অংশীদারিত্বে নির্মাণ করা হয়েছে। কেন্দ্রটি রাষ্ট্রীয় নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) যৌথভাবে নির্মাণ করেছে। দুই বিলিয়ন ডলার বা ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মিত এই কেন্দ্রের ঋণ সহায়তা দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। কেন্দ্রটি নির্মাণে এনডব্লিউপিজিসিএল এবং সিএমসি যৌথভাবে বিসিপিসিএল গঠন করেছে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিটটি উৎপাদনে আসবে আগামী মে মাসে।
উল্লেখ্য, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন