চিনের উহানে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসে গতবছর ডিসেম্বরে। বর্তমানে এই মারণ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে ত্রাহি ত্রাহি রব। পৃথিবীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। কোভিড ১৯ রোগের বলি হয়েছে ৭ লক্ষ ২৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে করোনার উৎসস্থল চিনের পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। মারণ ভাইরাসের আতুর ঘর উহানে গত এপ্রিল থেকেই লকডাউন উঠে গেছে। তবে নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। উহানে করোনা জয়ীদের ৯০ শতাংশই এখন ভুগছেন ফুসফুসের নানা সমস্যায়।
করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত হয়েছিল চিনের উহান শহর থেকে। সেখানে এখন মারণ ভাইরাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। তবে করোনার ফল এখনও ভুগছে সেখানকার মানুষ।
করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত হয়েছিল চিনের উহান শহর থেকে। সেখানে এখন মারণ ভাইরাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। তবে করোনার ফল এখনও ভুগছে সেখানকার মানুষ।
গত বছরের ডিসেম্বরে চিনের এই উহান শহরেই প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। ক্রমে চিনের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে বাকি বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। বর্তমানে উহানে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১০০ শতাংশই রোগ মুক্ত। তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন চিকিত্সকেরা।
তবে সুস্থ হয়ে ওঠাদের মধ্যে ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ফের করোনা আক্রান্ত হয়ে তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে যেতে হয়েছে। উহানের যে হাসপাতালে প্রথম এই আউট ব্রেক হয়েছিল, সেখান থেকেই এই রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।
উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝোংনান হাসপাতালের ডিরেক্টর পেং ঝিয়ং জানান, তাঁর নেতৃত্বে চিকিত্সকদের একটি দল ১০০ জন সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। গত এপ্রিল থেকেই ওই রোগীরা চিকিত্সক দলটির পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পেংয়ের চিকিত্সকেরা জানাচ্ছেন, সেরে ওঠা করোনা রোগীরা ৬ মিনিটে ৪০০ মিটারের বেশি হাঁটতে পারছেন না। যেখানে আগে ৬ মিনিটে অনায়াসে ৫০০ মিটারের বেশি অতিক্রম করতে পারতেন। ওয়াকিং টেস্টের পরেই তাঁরা এই রিপোর্ট দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, সীমাক্ষার জন্য বেছে নেওয়া রোগীদের গড় বয়স ৫৯ বছর।
চিনা বিশেষজ্ঞদেরই আর একটা টিম জানাচ্ছে, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার তিন মাস পরেও দেখা গিয়েছে আক্রান্তদের অনেককে অক্সিজেন মেশিনে ভরসা করতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেও অক্সিজেন মেশিন ছাড়া তাঁরা থাকতে পারছেন না। দ্বিতীয় সীমাক্ষাটি চালিয়েছেন, বেজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইনিজ মেডিসিনের ডংজিমেন হাসপাতালের চিকিৎসক লিয়াং টেংগ্সিয়াও। এই রোগীদের বয়স ৬৫-র উপর।
চিনা গবেষকেরা আরও লক্ষ্য করেছেন, ১০০ রোগীর মধ্যে ১০ শতাংশের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সেরে ওঠার পর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। গবেষকরা আরও খেয়াল করেন, ১০০ রোগীর ইমিউন সিস্টেম পুরোপুরি সেরে উঠেনি। অনেকের আবার ডিপ্রেশনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। জানা যাচ্ছে, ওইসব আক্রান্তরা সেরে ওঠার পরও তাঁদের সঙ্গে পরিবারের লোকেরা একই টেবিলে বসে খেতে চাইছে না। সেরে ওঠার পর অর্ধেক মানুষ ফিরেছেন কাজে।
চিনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই গত বছরের শেষে করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু হবেই প্রদেশে এখনও পর্যন্ত ৬৩,১৩৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চিনের এই প্রদেশে করোনার বলি হয়েছেন ৪,৫১২ জন। এদিকে গত মাস থেকেই উত্তর পশ্চিম চিনের এলাকাগুলিতেও নতুন করে করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে। করোনার সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই সমস্ত রকম পরিবহনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মহামারী সংক্রান্ত আইন ভাঙলে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।