মাশরাফি বলেছিলেন, একটি শিরোপা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একধাপ এগিয়ে দিবে। অবশেষে প্রতিক্ষীত সেই শিরোপা ঘরে তুলল বাংলাদেশ। সাতবার ফাইনাল ফাইনাল খেলা বাংলাদেশ অবশেষে জিতল ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা।
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল ম্যাচে উইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত কোনো পূর্ণ সদস্য দলের বিপক্ষে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। নিজেদের ইতিহাসে এটি টাইগারদের দ্বিতীয় ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় এবং টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে প্রথম ফাইনাল জয়, সপ্তমবারের প্রচেষ্টায়। এই ফাইনাল তাই সত্যিকার অর্থেই ‘লাকি সেভেন’ থাকল।
ডাবলিনের বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশ শিরোপা জিততে পারত আরও আগেই। সেক্ষেত্রে অবশ্য ‘পণ্ড’ হতে হত ফাইনালকে। বৃষ্টির অবিরত ধারায় সেই লক্ষণই প্রকাশ পাচ্ছিল। তবে ‘ফাইনাল’ ম্যাচের ‘মর্যাদা’ রক্ষায় হাল ছাড়েননি ম্যাচ অফিসিয়াল ও দুই দলের ক্রিকেটাররা। দফায় দফায় হানা দেওয়া বৃষ্টি থেমেছে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর। ম্যাচ তাই গড়িয়েছে কার্টেল ওভারে।
২১.১ ওভারে বিনা উইকেটে ১৩১ রান সংগ্রহ করা ক্যারিবীয়রা বৃষ্টি থামলে আবারো ব্যাট করতে নামে। ইনিংসের দৈর্ঘ্য ততক্ষণে কমে হয়েছে ২৪ ওভার। আরও ২৩ বলের মোকাবেলা শেষে ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১৫২ রান। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১০ রান।
শাই হোপের ৭৪ ও সুনীল আমব্রিসের ৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংসের পর ১৪৪ বলে ২১০ রান তুলে নেওয়া সহজ ছিল না। তবে দলকে জয়বঞ্চিত থাকতে হয়নি ফর্মের তুঙ্গে থাকা ওপেনার সৌম্য সরকারের ঝড়ো ইনিংসের কারণে।
দলীয় ৬০ রানের মধ্যে ওপেনার তামিম ইকবাল (১৮) ও ওয়ান ডাউনে নামা সাব্বির রহমানকে (০) হারানোর পর আরও কঠিন হয়ে যায় সৌম্যর কাজ।
তবে মারকুটে ভঙ্গিতে ব্যাট চালাতে থাকা সৌম্য দলের রানের গতি কমতে দেননি। তৃতীয় উইকেটে দুজনে গড়েন ৪৯ রানের জুটি। ৯টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৪১ বলে ৬৬ রান করা সৌম্য বিদায় নেওয়ার খানিক পর মুশফিকও সাজঘরে ফেরেন, ২টি করে চার-ছক্কায় ২২ বলে ৩৬ রান করে।
দুজনের বিদায়ের পর সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুনও। এরপর দল চাপে পড়ে গেলেও সেই চাপ জয় করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন। শেষপর্যন্ত তারা দুজনই নিশ্চিত করেন দলের প্রথম ফাইনাল জয়। মোসাদ্দেক ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন মাত্র ২৩ বলে।
মোসাদ্দেক ২টি ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ২৪ বলে ৫২ এবং রিয়াদ ২১ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশ জয় পায় ৭ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ও রায়মন রেইফার শিকার করেন দুটি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
উইন্ডিজ ১৫২/১ (২৪ ওভার)
হোপ ৭৪, আমব্রিস ৬৯*, ব্রাভো ৩*
মিরাজ ৪-০-২২-১, মাশরাফি ৬-০-২৮-০, সাইফউদ্দিন ৫-০-২৮-০, মুস্তাফিজ ৫-০-৫০-০
বাংলাদেশ ২১৩/৫ (২২.৫ ওভার) (ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে লক্ষ্য ২১০)
সৌম্য ৬৬, মোসাদ্দেক ৫২*, মুশফিক ৩৬, রিয়াদ ১৯*, তামিম ১৮
রেইফার ২৩/২, গ্যাব্রিয়েল ৩০/২
ফল: বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী।