নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) পত্নীতলা জোনের সরকারী কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম (৪১) এর বিরুদ্ধে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি একজন কর্মচারী হয়ে প্রকাশে মাদক সেবন করায় উপজেলা জুড়ে গুঞ্জন চলছে।
রফিকুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহী জেলার বোয়ালিয়া থানার শালবাগান এলাকায়। ছবিতে দেখা যায়, মুখে ইয়াবা সেবনের জন্য সিগারেট আকৃতির নল। আর নিচ থেকে একজন ইয়াবা সেবনের র্যাং ধরে আছেন। যেখানে লাইটার দিয়ে আগুন দেয়া হচ্ছে। রফিকুল ইসলাম রাতের বেলা একটি বন্ধর ঘরে ইয়াবা সেবন করছেন।
জানা যায়, রফিকুল ইসলাম কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধিনস্থ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পত্নীতলা জোনের সরকারী কোষাধ্যক্ষ হিসেবে প্রায় নয় বছর যাবৎ কর্মরত আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দপ্তরের কর্মচারীরা বলেন, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক গ্রহণের সাথে যুক্ত। তাকে দেখলেই বোঝা যায় তিনি একজন নিয়মিত মাদকসেবী। তবে কেন যে তার বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি সেটা উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। অফিসের অনেকেই জানে তিনি মাদক গ্রহণ করে থাকেন। তার চলাফেরাও খুব বেশি স্বাভাবিক নয়।
এ ব্যাপারে সরকারী কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি একসময় মাদক বা ইয়াবা সেবন করতাম। তবে মাদকাসক্ত না। আর এখন ইয়াবা সেবন করি না। আমার মনে হয় আপনার কাছে যে ছবি আছে সেটা কিছুদিন আগের। পরিচিত কয়েকজন এর পাল্লায় পড়েছিলাম। তারা আমাকে এক প্রকার জোর করেই ইয়াবা সেবন করাইছে। গত কুরবানি ঈদে জামিল ও মহসিন সহ কয়েক ব্যক্তি আমাকে জোর করে ইয়াবা সেবন করিয়েছে। তারা জোরাজুরি করায় ২-১টা টান দিয়েছি। ঘটনাস্থানটি উপজেলার নজিপুরের কাশিপুর এলাকার বিলাশ ফকিরের বাড়িতে। বিষয়টি স্যার জানার পর তিনি আমাকে সবসময় গাইডে রাখেন।
তিনি বলেন, পত্নীতলায় দীর্ঘদিন থেকে চাকরি করছি। এখান থেকে বদলি হয়ে রাজশাহীতে যাওয়ার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করেছি। আমি চাচ্ছিলাম বদলি হয়ে রাজশাহীতে থাকার জন্য। এ নিয়ে পরিবারের সাথে কয়েকবার দ্বন্দ্বও হয়েছে। এর
আগে দিনাজপুর জেলায় ছিলাম। মানষিক অশান্তিতে থাকায় মাদক সেবন করেছি। তবে এখন মাদক সেবন করিনা।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পত্নীতলা জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইন্তেখাফ আলম বলেন, গত চার বছর হলো এই অফিসে যোগদান করেছি। যতদূর জানি রফিকুল ইসলাম এক সময় মাদক গ্রহণ করতো। আমার জানা মতে এখন আর মাদক সেবন করে না। তারমধ্যে সবসময় স্বাভাবিক আচরণ ছিল। এখন পর্যন্ত অফিসে কোন ধরনের সমস্যা হয়নি।
গত কুরবানি ঈদে মাদক সেবন করেছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তো জানা নেই। ভিতরে ভিতরে মাদক সেবন করলে তো আমি বলতো পারবো না। যদি সে মাদক সেবনের সাথে জড়িত থাকে তাহলে উপযুক্ত প্রমাণ পেলে দাপ্তরিক নিয়ম অনুযায়ী
তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নওগাঁ মাদক বিরোধী সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি মাষ্টার হাফিজুর রহমান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যখন সরকারি, বেসরকারি সংগঠনসহ সমাজের সচেতন মহল এক সাথে কাজ করে যাচ্ছে। তখন সরকারি দপ্তরের কেউ যদি মাদক গ্রহণের সাথে জড়িত হলে সত্যিই চরমভাবে ব্যথিত করে। একজন মাদকসেবী কিভাবে এমন পোষ্টে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে। মাদক গ্রহণ করলে তো তার কাজ-কর্ম বা আচরণ স্বাভাবিক থাকেনা। সেই দপ্তরের যারা প্রধান তারা কি করে বুঝলাম না। এমন মাদকসেবী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।