বেসরকারিখাতে দ্রুত শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ইষ্টওয়েষ্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোনকে চূড়ান্ত সনদ প্রদান করেছে।
ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে বুড়িগংগা নদী সংলগ্ন এলাকায় ১০২ একর জমির উপর এই জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ জোনটি প্রতিষ্ঠা করছে।
সোমবার রাজধানীর পান্থপথে বেজা কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইস্টওয়েস্ট ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাফিয়াত সোবহানের হাতে চূড়ান্ত সনদ তুলে দেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
এ সময় পবন চৌধুরী বসুন্ধরা গ্রুপকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ঢাকার নিকটবর্তী স্থানে হওয়ায় ইস্টওয়েস্ট ইকোনমিক জোন দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাবে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, নিমতলী, চকবাজারের মত ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ ধরনের দূর্ঘটনা এড়াতে পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে বেজা বদ্ধ পরিকর। তিনি বিনিয়োগকারীদের অনুরোধ করেন সরকারের সকল আইন ও নীতি প্রতিপালন করে তারা যেন পরিকল্পিত শিল্প স্থাপন করেন।
একইসাথে তিনি দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সমান সুযোগ রেখে পরিকল্পনা তৈরি করার পরামর্শ দেন। কেবলমাত্র কর অবকাশ বা ইনসেন্টিভ প্যাকেজের কথা চিন্তা না করে বৃহত্তর স্বার্থে সকল বিনিয়োগের জন্য সুযোগ সৃষ্টির প্রতি গুরুত্ব দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ইস্টওয়েস্ট ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাফিয়াত সোবহান বলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে এবং রপ্তানীযোগ্য পণ্য প্রস্তুতিতে বসুন্ধরা গ্রুপ সুনামের সাথে কাজ করছে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠান দেশ এবং দেশের বাইরের বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে আগ্রহী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাল্টি ফুড প্রডাক্টস, ফুড ইন্ডাস্ট্রি, ফুড এন্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি,এলপিজি সিলিন্ডার ম্যানুফ্যাকচারিং জাতীয় হালকা ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই জোনে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। জোনটিতে ২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, জোন এলাকায় কারখানা ও প্রশাসনিক ভবন, পণ্যাগার, লজিস্টিক এলাকা, পানি ও বর্জ্য শোধনাগার, সড়ক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সবুজায়ন করা হবে। পরিবেশের উপর যাতে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব না পরে তার জন্য পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। জোনটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে প্রায় ২০ হাজার সরাসরি কর্মসংস্থান ও পরোক্ষভাবে আরো ৫০ হাজার মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
জোনটি হজরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হতে ৩২ কিলোমিটার, ঢাকা মহানগর হতে মাত্র ৮ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা শহর হতে ১০ কিলোমিটারে দূরে অবস্থিত।