অবশেষে ইসরায়েল ও লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার ভোর চারটায় এই চুক্তি কার্যকর হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি উভয় পক্ষ মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি ইসরাইলের মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার অনুমোদন করে। পরে বুধবার সকাল থেকে কার্যকর হয়। এর আগে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি পূর্ণাঙ্গ অনুমোদনের জন্য ইসরাইলের পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে।
তিনি জানান, পার্লামেন্টে চুক্তির সম্পূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরা হবে। এ সময় উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে ফেরার আহ্বানও জানান নেতানিয়াহু। ভাষণে তিনি দাবি করেন, হিজবুল্লাহ বর্তমানে আগের মতো শক্তিশালী নেই। ইসরাইলি বাহিনী তাদেরকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তেলআবিব লক্ষ্য পূরণ করেছে। এ সময় চুক্তি অমান্য করলে কঠোর জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। যদিও, যুদ্ধবিরতির চুক্তির মধ্যেই লেবাননজুড়ে ইসরাইলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, হিজবুল্লাহ যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং পুনরায় অস্ত্র নেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা আক্রমণ করবো। তারা যদি সীমান্তের কাছে সন্ত্রাসী অবকাঠামো আবার নির্মাণের চেষ্টা করে আমরা আক্রমণ করবো। হিজবুল্লাহ’র নেতাসহ হাজার হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করে তাদের শক্তি বহুলাংশে খর্ব করে দেয়া হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি শুরুর আগে সীমান্তে গোলাগুলি চলছিল। হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা মঙ্গলবার রাতে ইসরাইলের দিকে ড্রোন ছুড়েছে। অন্যদিকে ইসরাইল বৈরুতে বিমান হামলা চালিয়েছে। এর আগে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বৈরুতের ওই এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করে।
বুধবার সকালে বৈরুতের দুটি এলাকা খালি করার নির্দেশ দেয় ইসরাইল। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগে আবারও বোমা হামলার খবর পাওয়া গেছে। তবে, চুক্তি বজায় থাকে তাহলে এটি ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ৬০ দিনের একটি অন্তর্বর্তী সময় থাকবে। আর, এই সময়ের মধ্যে ইসরাইলি সেনা এবং হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা উভয়ই যথাক্রমে ইসরাইলি সীমান্তের উত্তর এবং লিতানি নদীর দক্ষিণের এলাকা ত্যাগ করবে এবং সেখানে লেবানের নিয়মিত সেনা বাহিনীকে মোতায়েন করা হবে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির পূর্ণ শর্তাবলি এখনো জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়নি, তবে প্রধান শর্তগুলো হলো- উভয় পক্ষের রকেট হামলা, বিমান হামলা এবং অন্যান্য সামরিক কার্যক্রম বন্ধ হবে। ইসরাইলি সেনারা লিতানি নদীর দক্ষিণ এবং ইসরাইলি সীমান্তের উত্তরের এলাকা থেকে প্রত্যাহার হবে।
হিজবুল্লাহও একই এলাকা থেকে প্রত্যাহার হবে এবং তাদের অবকাঠামো পুনর্গঠন না করার প্রতিশ্রুতি দেবে। হিজবুল্লাহ এখনো তার চুক্তি শেষ করার জন্য জনসমক্ষে কোনো বিবৃতি দেয়নি।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম