দীর্ঘ চার বছর সংস্কারের পর অবশেষে চালু হতে যাচ্ছে সাবেক রূপসী বাংলা হোটেল। ইন্টারকন্টিনেন্টাল নামে এখন থেকে পরিচালিত হবে, শেরাটন নামে বহুল পরিচিত ৫৩ বছরের পুরনো এই হোটেলটি। আগামী ১৩ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে হোটেলটির উদ্বোধন করবেন। বাইরের অবকাঠামোয় খুব বেশি পরিবর্তন না এলেও ভেতরের ডিজাইন ও সাজ সজ্জায় আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন।মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে ইতিহাসে নানাভাবে জড়িয়ে আছে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের নাম। ১৯৭১ সালে দুই দফা গেরিলা হামলা হয় ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত এই হোটেলটিতে। বিশ্ববাসী জানতে পারেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা। স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ৩৫ বছর পরে আবারও ফিরে আসছে নতুন রূপে। ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালে। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এটি চালু ছিল। এরপর পরিচালনায় আসে আর একটি বিদেশি হোটেল পরিচালনা প্রতিষ্ঠান স্টারউড। ২০১১ সাল পর্যন্ত এটি হোটেল শেরাটন নামে পরিচালিত হয়। তাদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রূপসী বাংলা নামে পরিচালিত হয় এই হোটেলটি। সবশেষ ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ৩০ বছরের জন্য হোটেলটি পরিচালনার চুক্তি করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ। প্রথম দফায় ২০১৬ এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চার বছর সংস্কার শেষে অবশেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় ঐতিহাসিক, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ‘অনেক পুরনো হওয়ার কারণে কোন ব্র্যান্ড অপারেটর এটা গ্রহণ করছিলো না। যার কারণে আমরা ব্যাপক সংস্কার করে হোটেলটা আবার নতুন করে চালু করার ব্যবস্থা করেছি। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে জনগণ ব্যবহার করতে পারবে।’ আগামী ১৩ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে হোটেলটির উদ্বোধন করবেন। তবে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়। হস্তান্তরের পর টেস্টিং ও কমিশনিং শেষে বাণিজ্যিকভাবে হোটেলটির কার্যক্রম শুরু হবে চলতি বছরের অক্টোবরে।বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ‘হোটেলের ছাদ ছাড়া সব কিছুই নতুন। রুম ছিল ২৬ বর্গমিটার এখন রুম করা হয়েছে ৪০ বর্গমিটার। আগে বল রুমে বসে ৫শ জন মিটিং করতে পারতো। এখন এখানে ১০০০ মানুষ মিটিং করতে পারবে। আগে সুইমিং ছিল নিচে আমরা এখন সুইমিং পুল ওপরে উঠিয়ে দিয়েছি।’ ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করছে।