শিক্ষা ডেস্কঃ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অননুমোদিত ভবন/ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, অননুমোদিত প্রোগ্রাম, মামলা-মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে- এ রকম ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ (আপডেট) করেছে। ভর্তির মৌসুম সামনে রেখেই এই হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করেছে ইউজিসি। জনস্বার্থে ইউজিসির ওয়েবসাইটে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন প্রদান করা হয়েছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, উচ্চশিক্ষায় ভর্তির এই সময়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করতেই সম্প্রতি ওয়েবসাইটের তালিকাটি হালনাগাদ করা হয়েছে। সেখানে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন প্রদান করা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে ভর্তি হতে হবে। পরে কোনো সমস্যায় পড়লে দায়ভার নেবে না ইউজিসি। দেশে বর্তমানে ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন আছে।
ইউজিসির দেওয়া তালিকা অনুযায়ী, অবৈধ ভবনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রোগ্রামের অনুমোদন নিয়ে সেই প্রোগ্রামের আড়ালে আরও ১০টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানিয়েছে ইউজিসি। অননুমোদিত প্রোগ্রামগুলো হলো- বিবিএ ইন জেনারেল, বিবিএ ইন ফিন্যান্স, বিবিএ ইন এইচআরএম, বিবিএ ইন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস, বিবিএ ইন মার্কেটিং, বিবিএ ইন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, বিবিএ ইন অ্যাকাউন্টিং, বিবিএ ইন ইকোনমিক্স, বিবিএ ইন এন্টারপ্রেনিউরশিপ এবং বিবিএ ইন সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অননুমোদিতভাবে পরিচালিত বিবিএ, পরিবেশ বিজ্ঞান, এমবিবিএস, বিডিএস এবং স্কাইকোথেরাপি প্রোগ্রামগুলো হাইকোর্ট ডিভিশন ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়টি এসব প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ইন কুরআনিক সায়েন্স অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ প্রোগ্রামটি অননুমোদিতভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।
ব্রিটেনিয়া ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে মালিকানা দ্বন্দ্ব রয়েছে। ইবাইস ইউনিভার্সিটির দুজন মালিক একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরমধ্যে একটি গ্রুপ ধানমন্ডি, অন্য গ্রুপ উত্তরায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একসময় কোর্টের রায়ে ধানমন্ডি বাড়ি নম্বর-২১/এ, সড়ক নম্বর-১৬ (পুরাতন-২৭), ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৯ ঠিকানাটি কমিশনের ওয়েব সাইটে আপলোড করা হয়েছিল। ওই স্থগিতাদেশের কার্যকারিতা ভ্যাকেট হয়ে যাওয়ায় ইবাইস ইউনিভার্সিটির ওই ঠিকানা কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে বাতিল করা হয়। তাই বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কোনো ঠিকানা নেই।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের Civil Petition for Leave to Appeal No. 1967/2018 (out of Writ petition no. 4263/2018) এর আদেশ বলে দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার ঠিকানা এবং প্রোগ্রামগুলো ইউজিসির ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। কমিশন থেকে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরুর অনুমতি এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
এছাড়া, সরকার কর্তৃক নতুন করে অনুমোদন দেওয়া ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অনুমতি পায়নি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- রূপায়ন এ কে এম শামসুজ্জাহা বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খান বাহাদুর আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি, মাইক্রোল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং আর টি এম আল কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি।