ইউক্রেন যুদ্ধ দেখে মনে হয়েছিল কয়েকদিনেই থেমে যাবে। পশ্চিমা দেশের হুমকি ধমকিতে রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করে দিবে! কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ন্যাটো জোট ভুক্ত দেশের কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্বেও রাশিয়া যূদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে আজ ২৬ দিন হল। রাশিয়াই এখন হুশিয়ারী দিচ্ছে ন্যাটো আক্রমন চালালে বিশ্ব যূদ্ধ হবে। প্রেসিডেন্ট জেলোনেস্কি ন্যাটোর প্রতি উষ্মা দেখিয়েছে সাহায্য না পেয়ে। যুদ্ধ বন্ধের দাবী করেছে রাশিয়ার কাছে। কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে কিন্তু সমঝোতা হয়নি। এখন রাশিয়া ইউক্রেনকে শর্ত দিয়েছে আত্নসমর্পনের।
এই যুদ্ধের প্রভাবে তেল সহ দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি বিশ্বজুড়ে। মার্কিন নীতির সমালোচনা করছে মিত্র আর ন্যাটো দেশও। গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে আমেরিকা যে সব দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা রাশিয়ার পক্ষে এসে দাড়িয়েছে। চীনের মত শক্তিশালী দেশও রাশিয়াকে সমর্থন দিয়েছে। জাতিসংঘ যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব কার্যকর করতে পারছেনা। বিশ্ব বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে বাইডেন এখন দফায় দফায় আলোচনা করছে শত্রু দেশের সঙ্গেও। ভারত পাকিস্তান ইরান আফগানিস্তান সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিকে কাছে টানতে পারেনি মার্কিন নীতি। বন্ধু দেশ সৌদিআরবও বাইডেনের ফোন কল অগ্রাহ্য করেছে। উত্তর কোরিয়া সহ এশিয়ার বেশীরভাগ দেশই আমেরিকার নীতিতে সমর্থন দিচ্ছে মনে হয়না। রাশিয়া যেভাবে যুদ্ধ করছে কেইভ দখল করা এখন সময়ের ব্যপার মাত্র। পুতিন ভেবে চিন্তে এবং সুদীর্ঘ পরিকল্পনা করেই আটঘাট বেধে যুদ্ধে নেমেছে।
এশিয়ার রাজনীতিতেও ইউক্রেন যুদ্ধ প্রভাব ফেলবে বোঝাই যাচ্ছে। ভারতের মোদি সরকারের দ্বৈত নীতি বাঁধার মুখে পরেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিযোগ তুলেছে পশ্চিমা দেশেগুলির নীতির বিরুদ্ধে। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চাইছে ইমরান। ইরান এবং উত্তর কোরিয়া আনবিক শক্তি পরীক্ষার সুযোগ খুঁজছে। মধ্যপ্রাচ্যেও রাশিয়া তার অবস্থান দৃঢ় করে ফেলেছে। বিশ্ব বাজার এখন নিয়ন্ত্রন করবে চীন আর রাশিয়া। আমেরিকা শুধু সমরাস্ত্র বিক্রি করে বিশ্ব মোড়লের ভূমিকায় থাকতে পারবেনা। বৃহত্তর জোটের বিপক্ষে যুদ্ধ করার ভুলটিও আমেরিকা করবেনা। অর্থনৈতিক সঙ্কটে পরে বাইডেন এখন নিজ দেশেই তোপের মুখে। অভ্যান্তরীণ রাজনীতিতে প্রেসিডেন্ট বাউডেন এখন চাপে রয়েছেন। পুতিনকে যারা অপরিপক্ক ভাবে ভুল করেছিল তারাও এখন নড়েচড়ে বসেছে। বিশ্বে রাজনীতির এমন বাস্তবতার অবস্থান নিয়ে বিরোধী দলের সমালোচনা শুনেছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সরকার যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, বিশিষ্ট সমাজসেবক, কলামিস্ট, টরন্টো, কানাডা।