চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ-সংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার অনুমতির জবাব দিতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন পুতিন।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, রাশিয়ার ওপর কোনো প্রচলিত মিসাইল হামলা হলে, বিশেষত যদি সেটি কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সমর্থনে হয়, তাহলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন এই নীতি রাশিয়ার বিদ্যমান পারমাণবিক নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মিসাইল দেয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিলো মস্কো।
পাঁচ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে কিয়েভকে মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ওই সবুজ সংকেত দেন বাইডেন। ক্ষুব্ধ ক্রেমলিনের অভিযোগ, ওয়াশিংটন ‘আগুনে ঘি’ ঢালছে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাশিয়া পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে পারমানবিক অস্ত্র ব্যবহারে বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানালো। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, ড্রোন, প্রচলিত মিসাইল বা অন্যান্য সামরিক বিমানের মাধ্যমে চালানো কোনো হামলাও রাশিয়ার পারমাণবিক জবাবের শর্ত পূরণ করতে পারে। একই সঙ্গে, কোনো জোটের সদস্য রাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর আগ্রাসন চালালে, সেটিকে পুরো জোটের পক্ষ থেকে আক্রমণ হিসেবে গণ্য করবে মস্কো।
নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, রাশিয়া কোনো অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, যদি সেই রাষ্ট্র পারমাণবিক শক্তিধর কোনো দেশের সমর্থন পায়। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আক্রমণ যদি কোনো পারমাণবিক শক্তিধরের সহযোগিতায় ঘটে, তাহলে সেটিকে যৌথ আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
তিনি এটিকে ‘বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
পেসকভ জানান, এ নীতিমালা রাশিয়ার ওপর ‘বড় ধরনের বিমান হামলা’ হলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে অনুমতি দেয়। এমনকি, যদি প্রচলিত অস্ত্রও ব্যবহৃত হয়, তবু পারমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে মস্কো।