আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরতদের নিজের কোনো স্থায়ী আবাসন ছিল না ছিল না কোন বসতভিটা। থাকতেন শ্বশুরবাড়িতে। তার দুরাবস্থা দেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহয়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে ব্যবস্থা করে দেন তাকে বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ উপলক্ষে বাস্তুহারা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে শুরু হওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের কার্যক্রমের একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন। এখন সেখানেই বসবাস। ঘর পেয়েই বসে থাকেননি। নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ঘরের পাশেই পতিত জমিতে গড়ে তুলেছেন নানান জাতের সব্জি বাগান। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে সেই বাগানের সব্জি এখন বিক্রিও করছেন বাজারে। বলছিলাম মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের নিয়াজ উদ্দিনের জীবন গাঁথা কিছু কথা।
উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বোবারথল গ্রামের বাসিন্দা নিয়াজ উদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছেন শ্বশুর বাড়ি বোয়ালী গ্রামে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আর কতদিন! তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় পেয়েছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর। গত ৬ মাস থেকেই স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সেখানে বসবাস করে আসছেন। পেশায় একজন কৃষক। অন্যের জমি বর্গাচাষে চাষ করেন। ঘর পাওয়ার পর ঘরের আশপাশে ও পাশের কিছু জমিতে গড়ে তুলেছেন সব্জি বাগান। নিজের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করে গড়ে তোলা বাগানে রয়েছে লাউ, ঝিঙ্গে, শিম, লালশাক, কাঁচামরিচ, শসা ও করলা ইত্যাদি। নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করছেন নিয়াজ উদ্দিন। হচ্ছেন স্বাবলম্বী।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
শুধু নিয়াজ উদ্দিনই না। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বিশাল শিমের চাষ করেছেন আরেক উপকারভোগী সায়াদ উদ্দিন। এ ছাড়া উত্তর শাহবাজপুরের করমপুর ও চাঁনপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাজিয়া বেগম, কোরবান আলী, সুহাদা আক্তার, আবদুল হাসিমসহ অনেক উপকারভোগীরা তাদের ঘরের পাশেই চাষ করছেন বিভিন্ন জাতের শাক-সবজি। এ ছাড়া গৃহপালিত হাঁস-মোরগ পালন করেও পাচ্ছেন অভাব অনটন ঘুচানোর জন্য সফলতা। তবে তাদের অভিযোগ শাক-সবজি উৎপাদনে কোনো সরকারি সহযোগিতা পাননি তারা।
নিয়াজ উদ্দিন বলেন, নিজের কোনো ঘরবাড়ি নেই। দীর্ঘদিন থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতাম। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে ওঠার পর ঘরের পাশের অল্প জমিতে বিভিন্ন জাতের সব্জি চাষ শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ, ভালোই ফলন হয়েছে। বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে।
আরেক উপকারভোগী আবদুল হাসিম বলেন, নিজেদের কোনো ঘর ছিল না। শেখ হাসিনা ঘর দিয়েছেন। নিজের জমি হয়েছে। সেই ঘরের পাশে সব্জি চাষ শুরু করেছি।
এ ব্যাপারে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে অনেক উপকারভোগী শীতকালীন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে আছে এবং থাকবে। যেকোনো সহযোগিতার জন্য তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব এমনটাই আশ্বস্ত করেন তিনি।
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান