ডিবিএন ডেস্কঃ চট্টগ্রামে সমালোচিত লেডি কিশোর গ্যাং লিডার তাহমিনা সিমিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পতেঙ্গা থানা পুলিশ ৷ পতেঙ্গার নেভাল এলাকায় এক কিশোরীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরের দিনই তাকে গ্রেপ্তার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। সিমিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান।
ভাইরাল হওয়া এক মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, সৈকতের কাছেই দাঁড়িয়ে ও বসে কথা বলছেন দুই কিশোরী ও এক কিশোর। দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় তার ছেলে বন্ধুকে উদ্দেশ করে বলছেন, ‘ওই দিন আমাকে মারার জন্য ছুড়ি নিয়েছে বেটা।’ উত্তরে বসে থাকা কিশোরী নিজের গাল এগিয়ে দিয়ে বলেন, ‘তুমি আমারে মারো, মারো মারো ..। মারতে বললাম মারো না।’
এসময় পেছনে এসে এক কিশোরকে (ছেলে বন্ধু) বসে থাকা কিশোরীর মাথায় আঘাত করে বলতে শোনা যায় ‘মারলে এভাবেও তো মারা যায়’। আঘাত পেয়ে নির্যাতিতা কিশোরী বলেন, ‘ভাইয়া প্লিজ..’। কিন্তু ওই কিশোর তার কথা না শুনেই ‘ওকে মারবা কেন’ বলে কিশোরীর মাথায় ও মুখে আঘাত করতে থাকে এবং বলতে থাকে ‘আমাকে চেন তুমি’।
এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি চাইলে তুমি এখান থেকে জিন্দা যাইতে পারবা না। তুমি ওই দিন কোন সাহসে ছুড়ি নিছো। আমি চাইলে তুমি যেতে পারবা না।’ এসময় নির্যাতিতা কিশোরী তার হাত ধরে অনুনয়-বিনয় করলেও মন গলেনি তার। উত্তরে মারধরকারী কিশোরীকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি জানো, আমি বললে এখানে তোমার লাশ ফেলে দেবে।’
মারধরের শিকার হওয়া ভিকটিম ওয়াসিফা চৌধুরী অর্না শুক্রবার রাতে সিমি ও তার বয়ফ্রেন্ডের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্টে মামলা করে। তবে সিমি শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তার হলেও তার সেই বয়ফ্রেন্ড মেহেরুলকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
রবিবার সেই মামলায় সিমিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মো. রেজার আদালত তিন দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পতেঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, ভিডিও ভাইরালের পরের দিন দুপুরে সিমিকে আটক করা হয়। রাতে তাকে ও তার বয়ফ্রেন্ডকে আসামি করে মামলা হয়। তার বয়ফ্রেন্ড ঘটনার পর থেকে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি। আমরা তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
এর আগে গত বছরের ২৪ আগস্ট বাসায় ঢুকে এক তরুণীকে বেধড়ক মারধর করেছিল ‘লেডি ক্যাডার’ সিমি ও তার গ্রুপ। পরে ওই তরুণীর মামলার জেরে গত ২৭ আগস্ট দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সিমি।