সিরাজগঞ্জের এক গৃহবধূর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান (লাভু)। এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ জেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
অডিও ক্লিপসে দুজনের কথোপকথনে শোনা যায়, ওই গৃহবধূ ধর্মীয় সভা শোনার জন্য স্থানীয় জঞ্জালিপাড়া নামক স্থানে ছিলেন। এ সময় আতাউর রহমান (লাভু) ওই গৃহবধূকে ফোন দিয়ে তার বাসায় ভোর ৬ টা ৩০ মিনিট থেকে ৭ টার মধ্যে আসার কূ-প্রস্তাব দেন। সেই সঙ্গে তার ছেলের বউকেও আনার কথা বলেন। দুজন মিলে ৫ শো ৫ শো ১ হাজার টাকা দিবেন বলেও স্বীকার করেন এই আওয়ামীলীগ নেতা।
আওয়ামী লীগ নেতার ৪ মিনিট ১ সেকেন্ডের ওই কুরুচিপূর্ণ অডিও ক্লিপসটি স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি বিষয়টি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পরে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। ৬ এপ্রিল যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফোন আলাপ ফাস হয়। ফোন আলাপটি বিশ্লেষণ করলে শোনা যায় লাভু সেই মহিলার খবর নিচ্ছে। এর পর লাভুর বসতবাড়িতে সেই রুমে মহিলাটিকে সকাল সকাল আসতে বলছে। অর্থাৎ এই মহিলা সেই রুমটি সম্পর্কে পরিচিত। এর পর লাভু বলছে সকালে তার ছেলে ১০ টা পর্যন্ত ঘুমায়। তাই সকাল,৭ টার মধ্যে তাকে আসতে হবে। মহিলাটা আসতে গরিমসি জানালে লাভু সেই মহিলার ছেলের বউকে আনতে বলে। একপর্যায়ে ৫০০ টাকা পরে এর জন্য ১০০০ টাকার অফার করে তিনি। এপর্যায়ে মহিলাটি বলে আমার ছেলের বউ আপনার ভাইসতা বউ। লাবু এসময় বলে নাটক থো। একপর্যায়ে মহিলাটি আসবে কি না তা পরে জানাবে বলে জানান। ফোন আলাপে আরো কিছু বাজে মন্তব্য করা হয়েছে।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সলঙ্গা থানার ঘুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লর রহমান বলেন, প্রায় এক মাসে আগে ওই নারী বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিল। তবে আমি এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার কোন সমাধান দিতে পারিনি। আর একজন দায়িত্বশীল নেতার এমন অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান লাভু সকল বিষয় অস্বীকার করে বলেন,আমার জীবনে এমন কোন খরাপ ঘটনা নেই। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাসানো হচ্ছে। আল্লাহর নামে তয়াক্কা করে বলি ওই মেয়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। এসকল ষড়যন্ত্রের পেছনে জিল্লর চেয়ারম্যানের হাত আছে। ভয়েস রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ভয়েসটা আমার কিন্তু কিভাবে এডিট করা হয়েছে আমি জানি না। তিনি আরো বলেন, সলঙ্গা বাজারে জনগণের স্বার্থে জিল্লুর চেয়ারম্যানের মার্কেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। একারণেই আমাকে অপমানিত করার জন্য তিনি এই কাজ করছেন।
এমনকি আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে তাদেরকে জেল খাটানো হয়েছিলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, থানা আওয়ামী লীগ নেতা লাভু শুধু এই গৃহবধূ ও তার ছেলের বউকেই নয়, এলাকার বহু নারীর ইজ্জত নিয়ে মেতে উঠেছে। তার অনৈতিক কর্মকান্ডর এমন অডিও আরও রয়েছে। মানুষ ভয়ে তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলছেনা। এমন কুরুচিপূর্ণ মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বহিষ্কার করা উচিৎ বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে একজন দায়িত্বশীল নেতার মুখ থেকে এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য সত্যিই দুঃখজনক।
ডিবিএন/এসডিআর/ মোস্তাফিজ বাপ্পি