আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ নতুন করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। গত সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতভর হওয়া এই সংঘাতে উভয়পক্ষের প্রায় ১০০ সেনা নিহত হয়েছেন। নিহত সেনাদের ৪৯ জন আর্মেনিয়ার এবং ৫০ জন আজারবাইজানের। আজ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, সোমবার রাতভর ওই যুদ্ধে তাদের ৪৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সংঘর্ষে তাদেরও ৫০ জন সৈন্য নিহত হয়েছে।
প্রতিবেশী এই দেশ দুটি একে অপরের সঙ্গে দুটি যুদ্ধ করেছে এবং তিন দশক ধরে নিয়মিত ছোট ছোট সংঘর্ষ চালিয়ে এসেছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার রাশিয়া বলেছে, সর্বশেষ সংঘর্ষ বন্ধের জন্য তারা যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করেছে। আর্মেনিয়া প্রাথমিকভাবে বলেছিল, যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পরিবর্তে শান্ত অবস্থায় রয়েছে। পরে আজারবাইজান জানায়, তারা প্রতিবেশী দেশটির ‘উস্কানি’র কারণে তার উদ্দেশ্যগুলো সম্পন্ন করেছে।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছে, সংঘর্ষ চলছে। পরিস্থিতি খুবই উত্তেজক।আজারবাইজানের তরফে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে। আজারি প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, আর্মেনিয়াই উসকানি দিয়েছিল।
আর্মেনিয়ার অভিযোগ, গত রোববার মধ্যরাতের পর আজারবাইজানের সেনা তিনটি জায়গায় কামান থেকে গোলা ছুড়তে থাকে। আজারবাইজানের দাবি, আর্মেনিয়া সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিছিয়েছে এবং প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করেছে। তার জেরেই উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
আর্মেনিয়া জানিয়েছে, তারা এই হামলার জবাব দিয়েছে। তারাও গুলি ছুড়তে থাকে। ফলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আজারবাইজানের অভিযোগ, আগে আর্মেনিয়ার সেনা তিনটি জায়গায় আক্রমণ করেছিল। আজারবাইজানের সেনা তার জবাব দিয়েছে। আজারবাইজান সেনার পাশাপাশি বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করেও আক্রমণ চালিয়েছে।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নাগর্নো কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজান কোনোরকম আলোচনায় রাজি নয়।
উল্লেখ্য, দুটি দেশই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে বড় আকারে যুদ্ধ হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০ সালেও দুই দেশ ছয় সপ্তাহ ধরে এক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল।