কি খুব আচর্য্য হলেন কথাটি শুনে তাই না? আসলে আর কত কথা, কত লিখা, কত প্রতিবাদ,কতটুকু সয়ে নেওয়া, কত ভিডিও তৈরী,কত মানুষের আত্ত্ব হত্যা, না খেয়ে থাকার যন্ত্রণা সহ্য করা যায় বলুন।মেম্বার,চেয়ারম্যান,কিছু অসাধু সরকারি আমলা,এমপি, মন্ত্রীদের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে আমর মাতৃভূমি আজ চরম কষ্ট পাচ্ছে। যা আমি অথর্ব একজনের সহ্য করার আর শক্তি নাই। তাই আমি আমার সরকারিভাবে মৃত্যুর ব্যবস্তা করার আর্জি করছি। আত্ত্বহত্যা মহা পাপ তাই এটি করা পসিবল না।তাই মৃত্যুটা সরকারিভাবে করার আর্জি করছি। এবার আসুন কেন মৃত্যু কামনা করছি একটু জেনে নেই।
ঘঠনা-১
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিগত কিছুদিন ধরে সাধারণ মানুষের ক্ষুধার কান্না ও তাদের সড়ক অবরোধ এবং খাবারের গাড়ি লুটপাট বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন সংগটন ও ব্যক্তি এতদিন এসব অসহায় মানুষের সাইনবোর্ড দিয়ে হাজার কোটি টাকা পকেটে ভরেলও এখন লাপাত্তা। তথাপি সরকারিভাবে প্রচুর পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এটি সবাই দেখতে পাচ্ছি আমরা৷তিনি চোরদের ছাড় দিবেন না মর্মে কঠোর হুশিয়ারি দেওয়ার পরও এই পাহাড় চুরি কেন জানি অদৃশ্য শক্তির কারনে বেড়েই চলেছে। আর এদিকে অনাহারী মানুষের কান্নায় বাংলার আকাশ আজ ভারি হয়ে ওঠেছে। কিছু দিন আগে চট্টগ্রামের ডবল মুরিং থানা এলাকায় ১৫হাজার সরকারি চাউলের খালি বস্তা ও আরো হাজারখানেক সরকারি চাউলের বস্তা সহ কতিপয় চোরদের ধরা হয়েছে। তারা জিজ্ঞাসাবাদে এমন লোমহর্ষক চুরি ও সিন্ডিকেটের কথা স্বীকার করেছেন ডিবিসি’র একটি প্রতিবেদনে দেখে সত্যি নিরব কান্না ছাড়া কিছুই আমাদের মত ছোট মানুষের পক্ষে করা পসিবল না। এদিকে দেশের অভুক্ত মা-বোনদের সুযোগ নিয়ে তাদের ধর্ষনও করে যাচ্ছে কিছু জনগনের প্রতিনিধি নামক কলঙ্কিত লেকজন৷ এমনও হয়েছে, কুকুরের জন্য যে খাবার দেওয়া হয়েছে, তা কুকুরের মালিকের কাছে নিজের পেঠের খিধা নিবারন করার জন্য চাইতেছে অভুক্ত মানুষ! ১৯এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাল,ডাল,তৈল সহ সরকারের দেওয়া ত্রান চোর ধরা পড়েছে প্রায় একশজন মত। এগুলো মুলত গননার গুলো, যেসব নেতা হেডম দিয়ে পার পাচ্ছে কিংবা তাদের চুরি ধরা যাচ্ছে না এমনও কত হতে পারে একটু আন্দাজ করুন!এর পর তো ত্রান বিতরনেও স্বজনপ্রীতি,ভোটার দেখে দেখে বিতরণ, নিজ পরিবারের সদস্যদের নাম ডুকিয়ে ত্রান সামগ্রী লোপাট সহ আরো কত প্রকার কাহীনি রয়েছে। আমরা ডবল মুরিং মডেল থানা এলাকায় ধরা খাওয়া ত্রান চোরদের উপর একটু নজর দিয়ে একটা হিসাব করি তাহলে দেখব কি হচ্ছে দেশে। ধরন প্রতিজন চোর এভারেজ ৫০০ বস্তা চাউল চুরি করছে। প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত হিসাবে যদি সব মিলায়ে ৫০০জন চোর ধরি আমরা, তাহলে একটু হিসাব মিলান৷ ৫০০*৩০০= ১৫০০০০/- ব্স্তা চাউল হয়! এবার প্রতি বস্তায় চাউল ৩০*১৫০০০০= ৪৫ লক্ষ কেজি চাউল! চিন্তা করছেন? এর বাইরে তৈল,ডাল সহ সরকারের দেওয়া অন্যান্য আইটেম গুলোও কিন্তু আছে। এবার আসেন আসল হিসাবে পুরো দেশে বর্তমানে একদম না খেয়ে রাস্তায় নেমেছে এমন মানুষের সংখ্যা কত হবে? সারা বাংলাদেশে সব মিলায়ে ২/৩ লক্ষ? আরো বেশী ধরেন ৫ লক্ষ ধরলাম। এখন শুধু ৪৫ লক্ষ কেজি চাউল যদি আমরা এসব অভুক্ত মানুষের নিকট সঠিকভাবে পৌছাতে পারতাম তাহলে এসব মানুষ রাস্তায় নামত? কখনও নামত না, আমাদের নেতাদের চুরি, বাটপারি, স্বজনপ্রীতি,ভোটার দেখে নিজ গ্রুপের লোকদের ত্রান দেওয়া যদি শূন্যের কোটায় আনা যেত, তবে কি আজ অনাহারী মানুষের কান্না শুনতে হত? কিন্তুু আমরা এসব প্রবল অদৃশ্য ক্ষমতার উৎসের অধিকারী চোরদের কিছুই করতে পারছি না কেন? তাদের এই চরম মানবতা বিরোধী ও নেক্কারজনক জনক কাজগুলো কি ইয়াবা,অস্ত্র ব্যবসা,ধর্ষনের চেয়েও বেশী নয়? তাহলে রাষ্ট্র তাদের কেন ক্রস ফায়ার দিতে পারছে না? নাকি আমার রাস্ট্রের শক্তিও এসব চোরদের ক্ষমতাধর সিন্ডিকেটের নিকট আজ পরাস্ত?তাদের ক্ষমতার উৎস আমরা সবাই জানি, কিন্তুু কেউ আজ কিছুই করতে পারছি না। যার দরুন হয়ত ত্রানমন্ত্রী ও ওনার সচিবালয়ের সচিবদের পদত্যাগ করা উচিত, না হয় আমার মত অথর্ব মানুষের মৃত্যু হওয়া উচিত! কিছু করতে না পারার দায়ে!
ঘঠনা-২
২০ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত হসপিটালে করোনা সেবায় কর্মরত চিকিৎসক ও নার্স করোনা ভাইরাস আক্রাতের সঠিক সংখ্যা ২৫০ জন এবং মৃত্যু গ্রহন করেছেন দুজন চিকিৎসক!দায়ীত্বর একজন পুলিশ সদস্যও করোনায় মৃত্যু বরণ করলেন। আসলে এসব মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী আমাদের উচ্চ মহলের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতা।এটি সামনে আরো প্রকট আকার ধারন করতে পারে৷কিন্তুু এর পেছনে কারা জানেন?আমি স্পষ্ট করে বলছি এর সব দায় দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের।একজন মন্ত্রী কতটুকু অকর্ম ও লোভী হলে দেশের মহামারীর সময় মানুষ হাসে এমন কথাবার্তা ও সংবাদ সম্মেলনে উল্টাপাল্টা ও অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে পারেন। দেশের মেডিক্যাল গুলোতে করোনা ভাইরাস রোগীর চিকিৎসারত সকল চিকিৎসক ও নার্সদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের জন্য এই স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিব দায়ী৷দেশের মানুষের জান প্রান নিয়ে খেলছে তারা। চায়নার কথা বলে নিজেদের সন্তানদের দিয়ে দুইনাম্বার এন৯৫ মাক্স সরবরাহ করে আজ বারোটা বাজিয়েছে৷ এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী ও হত্যার মামলা সহ উচিত বিচার হওয়া দরকার।কাউকে ডিরেক্ট মেরে ফেলা যেমন হত্যাকান্ড টিক তেমনি একটি সমাজ বা দেশের মহামারীর কিংবা জরুরি মুহুর্তে জনগনের জানপ্রাণ নিয়ে চিনিমিনি খেলে সবাইকে রিক্সে ফেলে রোগাক্রান্ত করাও বিরাট হত্যাকান্ড।একজন হত্যার দায়ে যদি কারও একবার ফাঁসি হয়, তবে যেসব মানুষের কারনে আজ স্বাস্থ্য বিভাগ ও দেশের জনগনের করুন অবস্থা তাদের সবাইকে লাইন ধরে একশবার ফায়ার করা উচিত৷ কেনই বা আমি একশবার ফাঁসির কথা বল্লাম আপনারা একবার চিন্তা করুন তো। যেসব লোক PPE এর কথা বলে রেনকোট সরবরাহ করতে পারে, যে সব লোক অরিজিনাল এন৯৫ মাক্স এর কথা বলে ভাইরাস সংক্রমন হয় এমন মাক্স ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করতে পারে। আর এসব নকল পিপিই সামাগ্রী সরবরাহ করতে গিয়ে সরকারের ১৭৮ কোটি টাকা মত ব্যয় হয়েছে এই টাকা কার?এর হিসাব জবাবদিহিতা ও দায়ভার কার? তাদের বিচার আপনার দৃষ্টিতে কি হতে পারে? কিন্তু আপনি আমি তো নগন্য একজন জনগন! আপনার আমর কোন সাধ্য নাই কিছু করার। তাই নিজের মৃত্যুর আবেদন ছাড়া আর কি আছে বলুন?
ঘঠনা-৩
করোনা পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্তায় বা আমাদের দেশীয় ব্যবস্তায়,সমাজ কিংবা পরিবারে আমরা কি আমাদের আগের পশুত্বকে কোরবানি করতে পারব? টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা, খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে সহযোগী ভুমিকা, চিকিৎসা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একজন আদর্শ জনগন হিসাবে কি আমরা রাস্ট্র তথা সমগ্র বিশ্বকে সহযোগিতা করতে পারব? নাকি টিক আগের মত অস্ত্র বানিজ্য, মহাকাশে গ্রহ যুদ্ধ, দখল যুদ্ধ, পারমাণবিক, হাইড্রোজেন অস্ত্র কিংবা বায়োলজিক্যল অস্ত্র ও গোলাবারুদ নির্মান ও মানুষ ধ্বংসের জন্য যা যা করনীয় তা আমরা আবারও অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ব?বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে আজও খাদ্য,চিকিৎসা ও শিক্ষায় যে পরিমানে বাজেট দেওয়া হয় তার কয়েকগুণ বেশী বাজেট দেওয়া হয় সামরিক খাতে অর্থাৎ মানুষ মারার জন্য। আমি এটা বলছি না যে আমাদের সামরিক খাতে বাজেট দেওয়ার যৌক্তিকতা নাই, অবশ্যই দিতে হবে। তবে তা হউক আমাদের সীমান্ত ও নিজেদের রক্ষা করার সামর্থ মত। কিন্তু তার বেশী বাজেট দেওয়া হউক খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও শিক্ষায় এবং বাজেট দেওয়ার সাথে সাথে এসব বাজেট গুলো যাতে চুরি না হয় ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্তা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কোন ব্যক্তি যদি এসব বাজেট তছরুপ করে ধরা পড়ে তার কোন বিচার না করে সোজা ফায়ারের ব্যবস্তা করলে আশা করি দুর্নীতি নামক ভাইরাসটিও একদিন আমাদের দেশ থেকে বিদায় নিবে। আর যদি আমরা আমাদের পশুত্বকে এর পরও লালন করে চলতে থাকি, তবে আমরা ভুলে গেলে চলবে না। প্রকৃতিও এরকম আরো বেশী মারাত্মক ভাইরাস কিংবা জীবানু আমাদের দিয়ে শাস্তি নিশ্চিত করবেন। আর টেকসই অর্তনৈতিক উন্নয়ন,খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার, চিকিৎসা নিরাপত্তা ও শিক্ষার ব্যবস্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজ দেশ ও বিশ্ব যাতে মানুষ মারার মারণাস্ত্র তৈরী করা ও পরিবেশ ধ্বংস হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকে রাস্ট্রীয়ভাবে সেই ভুমিকা রাকতে হবে।
এখন এসব বিষয় গুলো আমরা জনগন হিসাবে কতটুকু করতে পারি বা আমাদের সামর্থ কতটুকু? আসলে এসব বিষয়ে অধিকাংশ মুখ্য ভুমিকা সরকারের ও বিশ্ব মুড়লদের। তাই আমরা জনগণ হিসাবে শুধু আর্জি জানাতে পারি এসব শোষন, অবিচার, জুলুম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, মানুষ মারার মারণাস্ত্র, সৃষ্টিকে ধ্বংসের পায়তারা, দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার সহ সকল প্রকার গৃন্য কর্মকান্ড বন্ধ হউক। সরকারের টাকার অপচয় বন্ধ করা হউক। চিকিৎসা নিরাপত্তার জন্য সরকারের দেওয়া বাজেটে অরিজিনাল চিকিৎসা সামগ্রী নাম দিয়ে দুইনাম্বার ও নকল চিকিৎসা সামগ্রি সাপ্লাই দেওয়া বন্ধ করা হউক। সরকারের দেওয়া জনগনের জন্য ত্রান সামগ্রী চুরি বন্ধ করা হউক। তারপরও যারা এসব আকাম-কুকাম করতে থাকবে, দেশ ও দেশের জনগনের জান-মাল মিয়ে খেলা করবে। তাদের সরাসরি ফয়ার করার হউক। হয়ত আমার দেশ জননীকে মুক্তি দেওয়া হউক, নয়তো আমি এসবের জন্য কোন কিছু করতে না পারার দায়ে রাষ্ট্রের নিকট আমার মৃত্যু চাই!
শাহজাহান
মানবাধিকার কর্মী
( মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয় )