ডিবিএন ডেস্কঃ বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট, সাহিত্যিক ও ভাষাসৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী (৮৮ বছর) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। লন্ডনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে তিনি মারা যান। আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ একুশে পদকপ্রাপ্ত সিনিয়র স্বদেশ রায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক আলী হাবিবও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। লন্ডনের কয়েকটি সূত্রও এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম হাজী ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মার নাম জহুরা খাতুন। ১৯৫০ সালে ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফ্ফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স পাস করে ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার রাজনৈতিক পত্রিকা ‘চাবুক’ এর দায়িত্ব নেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মুখপাত্র ‘জয়বাংলা’য় কাজ করেন গাফ্ফার চৌধুরী। ১৯৭৪ সালে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি। এরপর সেখানেই স্থায়ী হন। লন্ডন থেকে দেশের সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি। ৬০ বছর ধরে মিঠাকড়া, ভীমরুল, তৃতীয় মত, কাছে দূরে, একুশ শতকের বটতলায়, কালের আয়নায়, দৃষ্টিকোণ ইত্যাদি শিরোনামে কলাম লিখেছেন তিনি। কলাম ছাড়াও কবি, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিত তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার ওপর লেখা ‘পলাশী থেকে ধানমণ্ডি’ তার বিখ্যাত নাটক।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী পেশাগত কাজে সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মানিক মিয়া পদকসহ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পদক ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।