স্টাফ রিপোর্টারঃ আরাফাত আহমেদ রনি
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজধানীর দোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ চলবে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণ করবই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশে থাকা ভাস্কর্যগুলো কেউ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেনি। হয়তো বৈধ একটি সংস্থা থেকে অনুমতি নিতে হয় সেটা এক বিষয়। আর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভাস্কর্য উদ্বোধন করিনি। সৌদি আরব, কাতার, মিশর, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তানের মত মুসলিম দেশগুলোতেও ভাস্কর্য আছে। আমরা তাদের চেয়েও কি বড় মুসলমান? তারা তো ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে না। আর মূর্তি হল দেবতার পূজা একটা, আর এখানে ভাস্কর্য তো মানুষের ভাস্কর্য। দেবতাকে পূজা করা হয়। এখানে তো মানুষকে পূজা করা হচ্ছে না। কাজেই এটাকে তারা এভাবে নিচ্ছে কেন? তারা কুষ্টিয়ায় যেটি করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মধুদার ভাস্কর্যের ওপর হামলা চালিয়েছে। এটা যারাই করবে ও যারা এর ধৃষ্টতা দেখাবে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন থাকতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’র কেন মামলা করতে হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কে মামলা করল সেটা বিষয় না। বঙ্গবন্ধু তো শুধু কোনো দলের না। তাই এটা নন-পলিটিক্যালরা করাই ভালো।
এখানে কাউকে হুকুমের আসামি করা হবে কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ না পেলে কাউকে ভিক্টিমাইজ করা উচিত না। কেউ হুকুম দিয়েছে এমন কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা সরকারে আছি, ক্ষমতায় আছি। আমাদের ঠান্ডা মাথায় এগুতে হবে। কথায় কথায় মাথাগরম করলে চলবে না। বুঝেশুনে আমাদের পরিস্থিতিটা ট্র্যাকল করতে হবে। কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে এখানে আবার আমাদের দেশে ধর্ম আবার গুরুত্বপূর্ণ ও সেনসেটিভ ইস্যু। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিষয়গুলো দেখছেন ও সেভাবে ট্র্যাকল করছেন।
হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, অহেতুক দেশে অশান্তি-বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা যুক্তি দিয়ে বলতে চাই। প্রধানমন্ত্রী তাদের সাক্ষাৎ দেবেন কিনা সেটি আমি জানি না। আলোচনার সুযোগ আছে কিনা সেটাও প্রধানমন্ত্রী দেখছেন। সব বিষয়েই সরকার প্রধান যদি মনে করেন তাহলে হতে পারে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই।
মন্ত্রী বলেন, শাপলা চত্বরে হেফাজতের ব্যানারে একটা আন্দোলন হয়েছিল যা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। রাজনৈতিক কারণে মুসলিম দেশগুলোতে মাঝে মাঝে এ ধরণের ধর্মীয় ইস্যু চলে আসে। আমরা এগুলো অবজারভ করছি। এখন তো বাংলাদেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ করছে। কিছু কিছু বিষয় আমাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা উচিত।
হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, হেফাজতের কওমি মাদ্রাসার ১৪ লাখ স্টুডেন্ট আছে। তারা মেইনস্ট্রিম থেকে দূরে আছে। তাদের আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মেইনস্ট্রিমে আনার জন্য দাবিটাকে ন্যায়সঙ্গত মনে হয়েছে। তার জন্য তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তার মানে এই নয় তাদের সাথে সমঝোতা করেছি। হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়, যে তাদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা করব।