আফগানিস্তানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কোনও বিরাম নেই। রবিবার সন্ধ্যায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদের কারাগারে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইসিসের (ISIS) হামলায় দশ জঙ্গি সহ কমপক্ষে ২৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
হামলার সময়ে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলি চালানোর ফাঁকে সুযোগ বুঝে জেল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল কয়েকশো কয়েদি। যদিও তাদের মধ্যে অধিকাংশই পুনরায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তিনশোর বেশি কয়েদির এখনও হদিশ মেলেনি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘আলজাজিরা’ জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় আচমকাই জালালাবাদ কারাগারের ঠিক বাইরেই গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েই ছুটে আসে নিরাপত্তায় থাকা জেলরক্ষী ও আফগান সেনারা। তার মধ্যেই কারাগারের মধ্যে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। নিরাপত্তারক্ষীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁদের দিকে গুলি ছুড়তে থাকে জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিন নিরাপত্তারক্ষী। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে পালটা গুলি চালাতে থাকে সেনা সদস্যরা। টানা ২০ ঘন্টা দু’পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই চলে। গুলির লড়াইয়ের ফাঁকেই কারাগার থেকে বহু কয়েদি সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়।
আফগানিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল ইয়াসিন জিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জালালাবাদ কারাগারে বন্দি থাকা আইসিস ও তালিবান জঙ্গিদের মুক্ত করতেই ওই হামলা চালানো হয়েছিল। তবে বিশেষ কোনও জঙ্গিকে মুক্ত করার জন্য ওই হামলা চালানো হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।
আইসিস জঙ্গিদের হামলার সময়ে কারগারে ১ হাজার ৭৯৩ জন বন্দি ছিল। হামলার পর পালিয়ে যাওয়া ৪৩০ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তিন শতাধিক কয়েদির কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ধরতে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়েছে। দু’পক্ষের লড়াইয়ে ২৯ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি অর্ধশতাধিক নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানে গত কয়েক বছর ধরেই জঙ্গি সংগঠন আইএসের তৎপরতা বেড়েছে। দেশটিতে এখনও জঙ্গি সংগঠনটির প্রায় ২ হাজার ২০০ সদস্য সক্রিয় বলে গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল জাতিসঙ্ঘ। সুত্রঃ দিজ মোমেন্ট।