আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ । পৃথিবীর সব নারীর অধিকার রক্ষায় ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চকে
‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয় এবং তা যথাযথভাবে পালনের জন্য পৃথিবীর সব
রাষ্ট্রকে আহ্বান জানানো হয়।
প্রতি বছর সারা বিশ্বে ৮ মার্চ একটি স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে পালিত হয়ে আসছে।
কোনো কোনো দেশে দিনটি সরকারি ছুটি হিসেবেও পালিত হয়। যেমন- রাশিয়া, কিউবা, ভিয়েতনাম,
ইউক্রেনসহ বেশ কয়েকটি দেশ। আবার চীন, মেসিডোনিয়া, নেপাল ও মাদাগাস্কারসহ অনেক দেশে
এ দিনটিতে কেবল নারীরা সরকারি ছুটি ভোগ করেন। যদিও বাংলাদেশে এ দুটি ব্যবস্থার কোনোটিই নেই;
তবে র্যালি, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের মধ্যে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
নারীর আজকের যে জয়যাত্রা, তার পেছনে আছে সীমাহীন ত্যাগ। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে নানা দমন-পীড়ন
ঠেলে নারী উঠে এসেছে আপন মহিমায়। যে নারী দিবস নারীর অগ্রযাত্রার প্রতীক সেটাও আনুষ্ঠানিকভাবে
শুরু হয়েছে অনেক কাঠগড় পোড়ানোর মাধ্যমে। ঘুরে আসা যাক সময়ের স্রোতের সেই পরম্পরা-
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকরা রাস্তায় নামেন মজুরি-বৈষম্য,
কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং কর্মক্ষেত্রে বৈরী পরিবেশের প্রতিবাদে।
১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন
পুরুষের পাশাপাশি নারীর সম-অধিকারের দাবি তোলেন।
১৯০৭ সালে জার্মানির স্টুটগার্টে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলন।
১৯০৮ সালে ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে ১৭ দেশের ১০০ প্রতিনিধি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন।
১৯১১ সাল থেকে ৮ মার্চ দিনটিকে ‘নারীর সম-অধিকার দিবস’ হিসেবে পালিত হয় ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে।
১৯১১ সালের ১৯ মার্চ প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়। এদিন সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও জার্মানিতে লক্ষাধিক নারী মিছিল ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেন।
১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।
১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করে।
১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৮ মার্চকে নারী দিবস পালনের জন্য বিল অনুমোদন পায়।
১৯৮৪ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণা করে জাতিসংঘ। ঐতিহাসিক সংগ্রামের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
২০০৯-এ বিশ্বের ২৯টি দেশে সরকারি ছুটিসহ প্রায় ৬০টি দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়েছে।
জাতিসংঘ এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ঠিক করেছে, ‘আমি প্রজন্মের সমতা : নারী অধিকারের প্রতি সচেতনতা’। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে আলাদা প্রতিপাদ্য, ‘প্রজন্ম হোক সমতার, সকল নারীর অধিকার’।