আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের রাখাইনে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের গণহত্যা থেকে রক্ষায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার একটি বিশদ প্রতিবেদন পাঠিয়েছে মিয়ানমার।
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ এনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গত নভেম্বরে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছিল আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
ওই মামলার তিন দিনের শুনানি শেষে ডিসেম্বরে অন্তবর্তী রায় আসে আইসিজের। সেই রায় অনুসারে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা থেকে রক্ষায় ও তাদের নিরাপত্তায় মিয়ানমার কী পদক্ষেপ নিল তার একটি প্রতিবেদন আইসিজের কাছে দেশটির সরকার পাঠাল।
শনিবার জমা দেয়া এই প্রতিবেদনটি এপ্রিলে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের কার্যালয়ের তিনটি নির্দেশনার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে বলে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি জানিয়েছে। তবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে কি-না নিশ্চিত করেনি মিয়ানমারের স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানিয়েছে, ওই তিন নির্দেশনার মধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং রাখাইনের আঞ্চলিক প্রশাসনকে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার নিদর্শন নষ্ট না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে গণহত্যা রোধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান ও ঘৃণা ছড়ানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।
যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বেসডর-অ্যাট-লার্জ ডেভিড শেফার বলেছেন, প্রতিবেদনটি পাঠানোর আগেই মিয়ানমার বলেছিল এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে যাচ্ছে। তবে মিয়ানমার কেবল আন্তর্জাতিক আদেশ মেনেছে দেখলেই হবে না বরং তারা প্রতারণা বা অবহেলা ছাড়া সততার সঙ্গে এটি করেছে সেটিও জানা উচিত।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘নির্মূল অভিযানের’ শিকার হয়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। হত্যা, গণধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয় এই মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠী।
যদিও আদালতে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।