নদ-নদী খাল বিল বেষ্টিত একটি জেলার নাম নওগাঁ। এ জেলা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি জেলা। নদ-নদী-খাল বিল বেষ্টিত জেলা হওয়ায় অন্যান্য সম্পদের মতো মাছ এ জেলার অন্যতম একটি সম্পদ। একটা সময় এ জেলার মাছের উৎপাদিত শুটকি দেশ ছাড়িয়ে রপ্তানি করা হতো বিদেশে। কিন্তু এখন আর সেই সুদিন নেই। নদ-নদী আর খাল বিল জলাশয় গুলোতে দেখা মিলছে না কাঙ্খিত দেশীয় প্রজাতির মাছের। যে কারণে দিন দিন কমছে শুটকি উৎপাদন। আর এতে করে শুটকির ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুকছেন শুটকি উৎপাদননকারী পরিবারগুলো।
তারা বলছেন একদিকে যেমন নদ-নদী খাল বিল ভরাট হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে বাড়ছে মাত্রাতিরিক্ত কিটনাশকের ব্যবহার। এ ছাড়াও শুটকি ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন না সরকারী প্রণোদনা। যে কারণে এখাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে।
সরেজমিনে আত্রাই উপজেলার ভর-তেঁতুলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুই শতাধিকের অধিক পরিবার শুটকি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে এক’শ কোটায়। আর এজন্য মাছের পর্যাপ্ততা, বর্ষা মৌসুমে পানি না হওয়া, নদ-নদী ও জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়া ও অতিরিক্ত কীটনাশক দিয়ে মাছ নিধন করাকে দায়ী করছেন শুটকি ব্যবসায়ী উপজেলার ভর-তেঁতুলিয়া গ্রামের ফিরোজ আলী, উপজেলার মৎস আৎড়দার মোঃ আক্কাছ আলী এবং শুঁটকি তৈরির শ্রমিক হাসিনা বেগম।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় শুটকি তৈরি করে রাজধানী ঢাকা সহ উত্তরাঞ্চলের রংপুর,নীলফামারী, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুরসহ প্রায় পনের থেকে বিশ জেলাসহ যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইন্ডিয়া, আমেরিকা, ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। আর এ শুটকি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। এবারে বন্যা কম হওয়ায় নদী খাল-বিল আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় দেখা মিলছেনা দেশীয় প্রজাতির মাছ।
ফলে বাজারে মাছ কম কিন্তু মুল্য বেশি হওয়ায় শুটকি তৈরিতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় শুঁটকি ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার শ্রী পলাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আত্রাইয়ে মাছের শুটকি গত এক দশক আগে এ উপজেলায় প্রতি বছর দুই শত মেট্রিক টনঃ শুটকি উৎপাদন করা হতো। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইন্ডিয়া, আমেরিকা, ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।
ডিবিএন/এসআর/ এমআরবাপ্পি