দেশে যথেষ্ট পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে যা দিয়ে চলা যাবে আরও কয়েক মাস। তাই আতঙ্কিত হয়ে পেঁয়াজ না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করে ভারতের রপ্তানি বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজের দাম।
আগেই ক্রয়াদেশ দেয়া (এলসি করা) পেঁয়াজ ভারত থেকে দেশে আসবে কি-না? এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বর্ডারে আটকে থাকা পেঁয়াজ খালাসের আশ্বাস দিয়েছে ভারত সরকার।
এর আগে গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ভারত সরকার তার দেশের চাহিদা-যোগানের ভারসাম্য রক্ষা করতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে এমন ঘোষণা আসতে না আসতেই অস্থির হয়ে উঠতে শুরু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পেঁয়াজ বাজার। এক রাতের ব্যবধানে ঢাকার আড়তগুলোতে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে যায় এই নিত্যপণ্যের দাম। মঙ্গলবার সকাল থেকে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৮০ টাকা দরে। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আবার অনেক আড়ৎ মালিক অধিক মুনাফার আশায় পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধও করে দেয়।
দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে মুহূর্তেই খালি হতে দেখা যায় গুদামে থাকা টনকে টন পেঁয়াজ। আমদানি না হলে আগামীতে দাম আরও বাড়ার আশঙ্কাও বাড়তে থাকে ব্যবসায়ীদের। হু হু করে দাম বাড়ার মধ্যেই ট্রাক ও ঠেলাগাড়ি ভর্তি করে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যাওয়ার রীতিমতো প্রতিযোগিতা দেখা যায় এই বাজারে। চলে পেঁয়াজ বেচাকেনার মহোৎসব। ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয প্রতিকেজি পেঁয়াজ। অথচ, ১২ ঘণ্টা (এক রাত) আগেও খাতুনগঞ্জে এই মানের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে।
গেল বছরও কোন ধরনের ঘোষণা ছাড়াই ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এবার দিল ১৪ সেপ্টেম্বরে।
এদিকে, দেশের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। এর মধ্যে সংরক্ষণ দুর্বলতায় পচে যায় ৩০ শতাংশ যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ইতোমধ্যে ভারত থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এসব পরিসংখ্যান বলছে, দেশে পেঁয়াজের কোন ঘাটতি নেই। কারণ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ মেট্রিক টন।