আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মজয়ন্তী। দ্রোহ, প্রেম, মানবতা ও সাম্যের কবি কাজী নজরুলের জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালে ২৫ মে। বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে যে নামটি সমানভাবে উচ্চারিত হয়, সেটি কাজী নজরুল ইসলাম।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে কাজী নজরুল ইসলামের কলম ধারালো তলোয়ারের মতো কাজ করেছে। তিনি বার বার শাসকদের কোপানলে পড়েছেন। নিক্ষিপ্ত হয়েছেন কারাগারে। কিন্তু মাথা নত করেননি অন্যায়ের কাছে। কাজী নজরুল ইসলাম ১৯০৮ সালে বাবার মৃত্যুর পর মাত্র দশ বছর বয়সেই রোজগারে নামেন। রুটির দোকানের কর্মচারি, মক্তবের শিক্ষক, মুয়াজ্জিন, মাজারের খাদেম, লেটোর দলের হয়ে গান বাধা, নাটকে অভিনয় করা— জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে এসব করেছেন। তার শিক্ষা জীবন কেটেছে রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুল, মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুল, ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরাম স্কুলে। দারিদ্র্য তাকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করতে দেয়নি। সিয়ারসোল রাজ স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।নজরুল প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেছেন। অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশী, দোলনচাঁপা, ছায়ানট, ইত্যাদি তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। বাঁধনহারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা তার উপন্যাস। ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা ইত্যাদি তার বিখ্যাত গল্পগ্রন্থ। সুগায়ক নজরুল ‘ধ্রুব’নামে একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। কমরেড মুজাফ্ফর আহমদ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন তার বন্ধু। নজরুল যেমন রবীন্দ্রনাথকে তার বই উৎসর্গ করেছেন, তেমনি রবীন্দ্রনাথও তার ‘বসন্ত’নাটক উৎসর্গ করেন নজরুলকে।দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে হঠাৎ করেই তার সাহিত্য সাধনা স্তব্ধ হয়ে যায়। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা-গান ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অন্যতম প্রেরণা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবিকে নিয়ে আসেন এবং তাকে বাংলাদেশের জাতীয় কবির সম্মান দেন। ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট তিনি মারা গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।