বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে (২৮ মে) ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন নন্দিত এই শিল্পী। ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
ময়মনসিংহ জেলার কেন্দুয়ায় বাবা তমিজউদ্দিন আহমেদ ও মা জয়নাবুন্নেছার ঘরে জন্ম নেন জয়নুল আবেদিন। ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।
১৯৩৩ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগেই স্কুলের পড়ালেখা বাদ দিয়ে কলকাতাযর গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস-এ ভর্তি হন জয়নুল। তার মা চিত্রশিল্পের প্রতি গভীর আগ্রহ দেখে গলার হার বিক্রি করে ছেলেকে কলকাতার আর্ট স্কুলে ভর্তি হতে সাহায্য করেন। জয়নুল আবেদিন ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতার সরকারি আর্ট স্কুলে পড়েন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
দেশ ভাগের পর পূর্ববঙ্গের প্রথম প্রজন্মের শিল্পীদের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন জয়নুল আবেদিন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানে একটি চিত্রকলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুভূব করেন তিনি। তখন তার উদ্যোগে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে পুরান ঢাকার জনসন রোডের ন্যাশনাল মেডিকেল স্কুলের একটি জীর্ণ কক্ষে গভর্নমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউট স্থাপিত হয়। প্রথমদিকে এর ছাত্রসংখ্যা ছিল মাত্র ১৮ জন। জয়নুল আবেদিন ছিলেন এ প্রতিষ্ঠানের প্রথম শিক্ষক। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে এই আর্ট ইনস্টিটিউট সেগুনবাগিচার একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়।
১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে আর্ট ইনস্টিটিউটটি শাহবাগে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে এটি একটি প্রথম শ্রেণির সরকারি কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে এবং এর নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের পর একই প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘বাংলাদেশ চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়।’ তিনি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জয়নুল আবেদিনের আগ্রহে ও পরিকল্পনায় সরকার ১৯৭৫-এ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে লোকশিল্প জাদুঘর ও ময়মনসিংহে জয়নুল সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠা করে।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন