নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আজ ৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস। মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে যশোর পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল। এদিন বিকেলে যশোর সেনানিবাস ছেড়ে পালিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। আর দেশের মধ্যে প্রথম শত্রুমুক্ত হয় এ জেলা। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে যশোর জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৯১ সালের ২০ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যশোর সেনানিবাস দখলে অভিযান শুরু করে। ওই সময় পাক বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলের ঘাঁটি চৌগাছা ঘিরে ফেলে সম্মিলিত বাহিনী। এরপর ২২ নভেম্বর রাতে চৌগাছার পতন হয়। চৌগাছা উপজেলার সলুয়া বাজারে হানাদার বাহিনী তৈরি করে অগ্রবর্তী ঘাঁটি। এ সময় যশোর সেনানিবাসের তিন দিকেই মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসে। প্রতিরোধ যুদ্ধের শেষ অভিযান চলে ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর। এ তিন দিন যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। এ সময় মিত্রবাহিনীও সীমান্ত এলাকা থেকে যশোর সেনানিবাসসহ পাক আর্মিদের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে পর্যুদস্ত পাকবাহিনী ৫ ডিসেম্বর থেকে পালাতে শুরু করে। আর এরই ধারাবাহিকতায় ৬ ডিসেম্বর দুপুরে যশোরেই প্রথম উঠেছিল বিজয়ী বাংলাদেশের রক্তসূর্যখচিত গাঢ় সবুজ পতাকা।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যশোর জেলার সাবেক কমান্ডার রাজেক আহমদ বলেন, ৬ ডিসেম্বরেই আমরা যশোর শহর থেকে শত্রু সেনাদের বিতাড়িত করি। কিন্তু সেদিন যশোর শহর ছিল জনশূন্য। ফলে পরদিন ৭ ডিসেম্বর বিজয় মিছিল বের হয়।’
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে ৭ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হতো। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাসবিদদের দেয়া তথ্য মতে, ২০১০ সাল থেকে ৬ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ৮ ডিসেম্বর যশোর শহরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয় মুক্তিবাহিনী। ১০ ডিসেম্বর যশোরের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওয়ালিউল ইসলাম।
আর ১১ ডিসেম্বর টাউন হল মাঠে জনসভা হয়। সেখানে মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অফিস-আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় ১২ ডিসেম্বর।