আজ অমর একুশে। জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পূর্ণ হলো আজ।
১৯৫২ সালের আজকের দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমাদের তরুণ ছাত্র যুবকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তাদের সেই সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ জাতি হিসেবে আমাদেরকে আজ পৃথিবীর ইতিহাসে অবিস্মরণীয় করেছে। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে সারাবিশ্বে।
একুশ আমাদের বাঁচতে শেখায়, লড়াই করে অধিকার আদায় করতে শেখায়। একুশ বাঙালি জাতির গর্ব ও অহংকার। মাথা নত না করার চির প্রেরণার অমর একুশের এ দিনে সারাবিশ্বের কোটি কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে একুশের অমর শোকসংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…।’
আজ সরকারি ছুটির দিন। অর্ধনমিত রাখা হবে জাতীয় পতাকা। একই সঙ্গে সর্বত্র ওড়ানো হবে শোকের কালো পতাকা। সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও বেতারে ভাষা দিবসের বিশেষ ক্রোড়পত্র ও অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সারাদেশেই আজ থাকবে নানা আনুষ্ঠানিকতা।
ভাষা সংগ্রামের রক্তস্নাত এই ইতিহাস শুধু বাঙালির মায়ের ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করাই নয়, বাঙালির স্বাধিকার, স্বাধীনতা, সব ধরনের বৈষম্য দূর করার সংগ্রাম ও অনুপ্রেরণার উৎস।
২১শে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালায়। এতে রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকে নিহত হন। এরপর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাষা আন্দোলন।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে ঘটেছিল বাঙালির ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার ঘটনা। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিল বাঙালি তরুণরা। একুশের চেতনা আমাদের আত্মমর্যাদাশীল করেছে। ‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ চিরকালের এ স্লোগান তাই আজও সমহিমায় ভাস্বর।