নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের ম্যাচের সিরিজ খেলার পরপরই বাংলাদেশে আসতে হয় ভারতকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা তিন ম্যাচের সে সিরিজটি হারতে হয় ভারতকে। বাংলাদেশে এসেও হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি তারা। হাতের মুঠোয় থাকা প্রথম ম্যাচ এক প্রকার কেড়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশ শেষ উইকেটে মিরাজ-মুস্তাফিজ জুটির কল্যাণে। অবিশ্বাস্যভাবে সে ম্যাচ হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে একই ভুল করতে নারাজ ভারত।
দ্বিতীয় ম্যাচ হারলে নিশ্চিত হবে সিরিজ পরাজয়ও। তখন তৃতীয় ম্যাচটি থাকবে কেবল নিয়ম রক্ষার। তবে সেটি যে বাংলাদেশের জন্য মোটেও সহজ হবে না তা স্পষ্ট ছিল ম্যাচের আগের দিন অনুশীলনে ভারতীয়দের শরীরি ভাষায়। এদিন মিরপুরে দীর্ঘক্ষণ অনুশীলন করল রোহিত শর্মারা।
অন্যদিকে দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় চায় বাংলাদেশ। প্রথম খেলায় হওয়া ভুলগুলো শুধরে কঠোর অনুশীলনে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় টাইগারদের। বাংলাদেশ অবশ্য তৃতীয় ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে চায় না। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেই নিশ্চিত করতে চায়—সিরিজের ট্রফিটা যেন দেশেই থাকে।
প্রথম ওয়ানডের ঐতিহাসিক জয়ে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা আছেন ফুরফুরে মেজাজে। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আপাতত দলের লক্ষ্য একটাই—সিরিজ জয় নিশ্চিত করা। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেও সেই জয় ছিল কষ্টার্জিত। ১৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমানের সাহসিকতায় ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। তবে কষ্টার্জিত জয়ের পরও একাদশে পরিবর্তনের তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।
তবে পরিবর্তন আসবেই না—এমনটি হলফ করে বলা যাচ্ছে না। কারণ সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে দলের ব্যাটিং পারফরম্যান্সের ছিল হতশ্রী দশা। তামিম ইকবাল না থাকায় ওপেনিংয়ে নেমে গোল্ডেন ডাকের শিকান হন নাজমুল হোসেন শান্ত। এদিকে নিজের সর্বশেষ ওয়ানডেতে ফিফটি হাঁকিয়েও জায়গা পাননি ইয়াসির আলী চৌধুরী। শেষ মুহূর্তে টিম ম্যানেজমেন্ট তাই শান্তর জায়গায় ইয়াসিরকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেও পারে।
এদিকে অনুশীলনের ফাঁকে ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন ভারতের ব্যাটার শিখর ধাওয়ান। এসময় তার কণ্ঠেও ঝরল আত্মবিশ্বাস। চাপের মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর রসায়ন ভালো করেই রপ্ত করা আছে তাদের। প্রথম খেলায় যেভাবে ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে সেরকম যে বারবার হবে না তা স্মরণ করিয়ে দিলেন আগের ম্যাচের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে এ ম্যাচে জয়ের ধারায় ফিরতে চাওয়া ধাওয়ান। এসময় এর আগেও অনেকবার টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ হেরে ভারতের সিরিজ জয়ের রেকর্ডের কথা বলেন তিনি। তার কথায়, ‘আমরা দ্বিতীয় ম্যাচের বিষয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী। এটা আমাদের জন্য প্রথম নয় যে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে গেছি। এরকম অনেকবার হয়েছে আমাদের সঙ্গে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আমরা জানি এরকম পরিস্থিতি থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। অবশ্যই বাংলাদেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে। তবে শেষ ম্যাচটি ছিল ইন্টারেস্টিং। এরকম প্রতিদিন হবে না।’
এ সময় নিজেদেরও উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন শিখর ধাওয়ান। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের দর্শকদেরও প্রশংসা করেন শিখর ধাওয়ান। তবে এটা যে তাদের জন্য একটি চাপেরও কারণ সেটিও স্বীকার করে নেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি উপভোগ করেন বলেও জানান ভারতের এ ব্যাটার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের দর্শক ইমোশোনাল, আমাদের চাপে রাখে, এটা আমরা উপভোগ করি। এরকম চাপে আমরা সবসময় ভালো খেলি।’
দ্বিতীয় ম্যাচেও একই রকম পিচে খেলা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এদিক বিবেচনায় ব্যাটিংয়ের গভীরতা বাড়াতে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারত একজন বাড়তি ব্যাটার নিয়ে নামার চিন্তা করছে ভারত।