ডিবিএন ডেস্কঃ আজকের জাটকাই আগামী দিনের রুপালি ইলিশ। তাই আজ ১লা নভেম্বর থেকে ৮ মাসের জন্য ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে শুরু হয়েছে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান। এখন থেকে জাটকা শিকার, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, বিনিময় ও মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে জাটকা শিকার, সংগ্রহ, মজুত কিংবা বিক্রয়ের ওপর সরকার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই সময় জেলেরা যাতে জাটকা শিকার না করে সেজন্য তাদেরকে বিশেষ ভিজিএফ দেয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার।
এছাড়া সরকারের এ নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেদের জাটকা ধরা থেকে বিরত রাখতে চলছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। পাশাপাশি আইন অমান্যকরীদের বিরুদ্ধে পরিচালনা করা হবে সমন্বিত অভিযান।
মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল দপ্তরের মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত আকারের (প্রায় ১০ ইঞ্চি) ইলিশকে জাটকা হিসেবে গণ্য করা হয়। নদনদীতে গত তিন-চার মাসের মধ্যে যেসব মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে, তাতে জন্ম নেওয়া ইলিশের আকৃতি এখন ২৫ সেন্টিমিটারের মধ্যেই আছে। জন্মের পর থেকে এক বছর বেঁচে থাকতে পারলে সেটি কমপক্ষে ১২ ইঞ্চি বা এক ফুট আকৃতির বড় ইলিশে পরিণত হবে। এ জন্য প্রতিবছর ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা নিধনে আট মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় জেলেরা ৫ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার কম ফাঁসের জাল ব্যবহার করলে জেল-জরিমানা করা হবে।
চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, মা ইলিশ সারা বছরই ডিম দেয়। তবে ৮০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছাড়ে আশ্বিনের পূর্ণিমায়। এ জন্য প্রতি বছর আশ্বিনের পূর্ণিমা ও অমাবস্যার মাঝের ২২ দিন ইলিশ নিধন বন্ধ রাখা হয়। এ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ২৫ অক্টোবর।
এদিকে অভ্যন্তরীণ নদনদীতে শুধু জাটকা নিধন নিষিদ্ধ হলেও পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীর ৪০ কিলোমিটারের অভয়াশ্রমে রোববার মধ্যরাত থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারি টানা তিন মাস ইলিশ নিধন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্য মাছ ধরার অজুহাতে ইলিশ নিধন বন্ধ করতে অভয়াশ্রমভুক্ত নদীতে নামতে পারবেন না জেলেরা। আগামী মার্চ ও এপ্রিলজুড়ে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা অপর পাঁচটি অভয়াশ্রমে পালিত হবে। এ ছাড়া অন্যান্য মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গভীর সাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে আগামী বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত।
মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় দপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুস সালেহীন বলেন, আট মাসের নিষেধাজ্ঞা পালনের জন্য জেলেদের প্রণোদনা হিসাবে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চার মাসে ১৬০ কেজি চাল সহায়তা দেওয়া হয়। বরিশাল বিভাগে তালিকাভুক্ত জেলে রয়েছেন তিন লাখ ৯৩ হাজার ১৯১ জন। গত বছর চাল সহায়তা পেয়েছিলেন দুই লাখ ৩২ হাজার ৭১ জন জেলে। এবারও তারা এ সহায়তা পাবেন।