বিশ্বজুড়ে মহাপ্রলয় সৃষ্টি করেছে নভেল করোনা ভাইরাস। এখনো কোন কার্যকর ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক নেই। বিশ্বের বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী ও ভাইরোলজিস্টরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিভাবে এলো এই মারণ ভাইরাস? কেউ বলেছেন, রাসায়নিক গবেষণাগারে তৈরি হয়েছে করোনা জৈব মারনাস্ত্র। আবার অন্যপক্ষ দাবি করেছেন, প্রকৃতি থেকে স্বাভাবিকভাবেই এই মারণ ভাইরাসের জন্ম হয়েছে। দুপক্ষের দড়ি টানাটানির মাঝে এবার চাঞ্চল্যকর দাবি করে বসলেন ভারতের চেন্নাইয়ের এক বিজ্ঞানী। বললেন, কোনো গবেষণাগার বা পরিবেশ নয়, কভিড-১৯ এর জন্ম রহস্যের সঙ্গে সূর্যগ্রহণের যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর এমন দাবিতে নড়েচড়ে বসেছে বিজ্ঞানী মহল। কবে এই ভাইরাসের দাপট শেষ হবে, তা নিয়েও আভাস দিয়েছেন এই বিজ্ঞানী।
পারমাণবিক ও ভূবিজ্ঞানী ড. কেএল সুন্দর কৃষ্ণা চেন্নাইয়ের বাসিন্দা। তাঁর দাবি, করোনা ভাইরাসের সঙ্গে সূর্যগ্রহণের যোগসূত্র রয়েছে। এই জীবাণুর উৎপত্তি কোনো রাসায়নিক ঘটনা নয়, বরং মহাজাগতিক ঘটনার ফলাফল এই মহামারি। মহাকাশ থেকেই এসেছে এই মারণ ভাইরাস। কিভাবে ঘটল এমন ঘটনা?
গত বছর ডিসেম্বরে শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর মেলে। বিজ্ঞানী কৃষ্ণার দাবি, ২৬ ডিসেম্বর ছিল সূর্যগ্রহণ। তারপর থেকেই এমন একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।
ড. কেএল সুন্দর কৃষ্ণার দাবি, সূর্যগ্রহণের সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের স্তরে রাসায়নিক বদল হয়েছিল। আর তার থেকেই এই ভাইরাসের জন্ম। আবার পরবর্তী সূর্যগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই পৃথিবী থেকে এই করোনাভাইরাস বিলীন হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন ওই বিজ্ঞানী।
তাঁর কথায়, আগামী ২১ জুন একই সঙ্গে সূর্যের বলয়গ্রাস ও পূর্ণগ্রাস গ্রহণ হবে। সেদিনই এই জীবাণুর দাপট শেষ হবে। ড. কৃষ্ণা নিজের তত্ত্ব দিয়ে এর ব্যাখা করেছেন। তাঁর কথায়, সূর্যগ্রহণের সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে তড়িতাহত কণাদের মধ্যে একটা বড়সড় রাসায়নিক বদল হয়েছিল। এমন এক বায়ো-নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকশন যার কারণে নিউট্রনের বদল শুরু হয়। এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয় যাতে করোনাভাইরাসের নিউক্লিয়াস তৈরি হয়। এই বায়ো-নিউক্লিয়ার ইন্টার্যাকশনই ভাইরাস তৈরির অন্যতম কারণ। এই স্তরটিকে বলা হয় ‘ডি-লেভেল’। তবে এই স্তরে কিভাবে ভাইরাস তৈরি হতে পারে তার কোনো ধারণাই দিতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা।
এদিকে,আগামীকাল রবিবার (২১ জুন) বছরের দীর্ঘতম দিন বা কর্কটক্রান্তি দিবস। এদিন বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ হবে। তবে এটি পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ নয়, আংশিক সূর্যগ্রহণও একে বলা যাবে না। আগামী ২১ জুন যে সূর্যগ্রহণ হবে তাকে বলয়গ্রাস গ্রহণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ইংরেজিতে এই গ্রহণ পরিচিত অ্যানুলার সোলার একলিপস নামে।
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই গ্রহণ দেখা যাবে। এছাড়া এশিয়ার অন্যান্য দেশ, আফ্রিকা এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ার কিছু কিছু অংশ থেকেও রোববারের বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।
ঢাকার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে সূর্যগ্রহণ শুরু হবে। দুপুর ১টা ১২ মিনিটে সূর্যগ্রহণের সর্বোচ্চ পর্যায় ও দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে গ্রহণ শেষ হবে। তবে ভারত, পাকিস্তান, চীন, তাইওয়ান ছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা গেলেও বাংলাদেশ থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে বলে জানিয়েছে অনুসন্ধিৎসু চক্র।